রবিবার, ১৩ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রবিবার, ১৩ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রবিবার, ১৩ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই রবিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি

৭৭৫ দিন কারাবাসের পর গুলশানের বাসভবনে খালেদা !

প্রভাতী ডেস্ক: দীর্ঘ ৭৭৫ দিন কারাগারে বন্দি থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মুক্তির পর তাকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় নিয়ে যাওয়া হয়। দীর্ঘ ২ বছরের বেশী সময় পর ফিরোজায় ফিরলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। বুধবার(২৫ মার্চ) বিকাল ৫টা ১৬ মিনিটে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর রোডের বাসভবন ফিরোজায় প্রবেশ করেন খালেদা জিয়া।

এর আগে মঙ্গলবার(২৪ মার্চ) তার মুক্তির বিষয়ে আইনমন্ত্রীর ঘোষণার পর প্রয়োজনীয় আইনী প্রক্রিয়া শেষে বুধবার বিকাল ৪টা ১২ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল থেকে বের হন খালেদা জিয়া। সেখান থেকে তিনি সরাসরি গুলশানে নিজ বাসভবন ফিরোজায় যান।

খালেদা জিয়াকে ঢাকা মেট্রো-ভ ১১-০৬৯২ নিশান পেট্রল গাড়িতে নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ পরিবার সদস্যরা বিএসএমএমইউ হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসভবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সঙ্গে চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের পাঁচটি গাড়ি এবং মাইক্রোবাসও ছিল। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের ভিড় ঠেলে যেতে অনেক বেগ পেতে হয় খালেদা জিয়ার গাড়িবহরকে।

এর আগে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের আবেদনের ফাইলে স্বাক্ষর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে মুক্তির আদেশের নথি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষের হাত ঘুরে বুধবার বিকাল ৩টার পর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পৌঁছায়।

মুক্তির শর্ত হিসেবে বাসায় অবস্থান করতে হবে খালেদা জিয়াকে। চিকিৎসা নিতে হবে দেশেই। সাজা স্থগিতকালীন ৬ মাস তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

গতকাল মঙ্গলবার বিকালে হঠাৎ করেই ডাকা সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়াকে মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, মানবিক দিক বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুই শর্তে তাকে (খালেদা জিয়া) মুক্তি দেয়ার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। খালেদা জিয়া বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশ যেতে পারবেন না- এমন শর্তে তাকে মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

সরকারি এ সিদ্ধান্ত জানার পর থেকে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী ও খালেদা জিয়ার পরিবার তার মুক্তির অপেক্ষায় ছিল। অবশেষে সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটল।

বুধবার সকাল থেকেই শোনা যাচ্ছিল তিনি মুক্তি পাবেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে তাকে মুক্তি দেয়ার আদেশের নথি বুধবার সকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু বুধবার দুপুরে গণমাধ্যমকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর আজ (বুধবার) দুপুর ১২টার দিকে ওই নথি আমাদের কাছে এসেছে। এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন তৈরি করে কারা কর্তৃপক্ষকে পাঠাবে। এর পরই ওই ফাইল কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তি পান খালেদা জিয়া।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে বন্দি ছিলেন খালেদা জিয়া। প্রথমে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হলেও গত বছর ১ এপ্রিল থেকে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়।

খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য আইনজীবীরা গত দুই বছরে বহুবার আদালতে গেছেন, কিন্তু জামিন হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে মার্চের শুরুতে খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার খবর আসে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কাছেও পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print