মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই শাবান ১৪৪৬ হিজরি

ক্লাস না করে নয়নের সাথে সময় কাটাত মিন্নি- নয়নের মা

প্রভাতী ডেস্ক: রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার আগের দিনও নয়ন বন্ডের বাসায় গিয়েছিলেন নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। মিন্নি যে নয়নের বাসায় গিয়েছিল তা প্রতিবেশীরাও দেখেছে। আলোচিত এ ঘটনার ১৮ দিনের মাথায় এমন বিস্ফোরক তথ্য দিলো নয়ন বন্ডের মা।

তিনি বলেন, রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ২৬ জুন বুধবার। এর আগের দিন মঙ্গলবারও মিন্নি আমাদের বাসায় এসে নয়নের সঙ্গে দেখা করে। আমার ছেলে তো মারাই গেছে। আমার তো আর মিথ্যে বলার কিছু নেই।

নয়ন বন্ডের মা বলেন, শুধু হত্যাকাণ্ডের আগের দিন মঙ্গলবারই নয়; রিফাত শরীফের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পরও মিন্নি নিয়মিত আমাদের বাসায় এসে নয়নের সঙ্গে দেখা করত। মোটরসাইকেলে মিন্নিকে রিফাত শরীফ কলেজে নামিয়ে দিয়ে চলে যেত। এরপর মিন্নি আমাদের বাসায় চলে আসত। আবার কলেজের ক্লাস শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে মিন্নি আমাদের বাসা থেকে বের হয়ে কলেজে যেত।

শাহিদা বেগম বলেন, রিফাতের সঙ্গে মিন্নির বিয়ের খবর পাওয়ার পর আমি আমার ছেলেকে অনেক নিষেধ করেছি, যোগাযোগ না রাখতে। কিন্তু আমার ছেলে নয়ন কখনও আমার কথা শুনত না। ওর মনে যা চাইতো ও তা-ই করত। নয়ন যদি আমার কথা শুনত তাহলে এমন নির্মম ঘটনা ঘটত না।

রিফাতের সঙ্গে বিয়ের পরও নিয়মিত নয়ন বন্ডের বাসায় আসা-যাওয়া এবং হত্যাকাণ্ডের আগের দিনও নয়ন বন্ডের বাসায় যাওয়ার বিষয়ে শনিবার সকালে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের ফোনে কল দিয়ে মিন্নির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, মিন্নি অসুস্থ। গতকাল তাকে ডাক্তার দেখানো হয়েছে। মিন্নি এখন ঘুমাচ্ছে। তাই মিন্নি কথা বলতে পারবে না।

এছাড়া মিন্নির সঙ্গে কথা বলতে হলে বরগুনা জেলা পুলিশের অনুমতি লাগবে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে স্ত্রী মিন্নির সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার একটি ভিডিও ওইদিনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়ে যায়।

নিহত রিফাত শরীফের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার ৬নং বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামে। তার বাবার নাম আ. হালিম দুলাল শরীফ। মা-বাবার একমাত্র সন্তান ছিলেন রিফাত।

রিফাত হত্যাকাণ্ডের পরের দিন অর্থাৎ ২৭ জুন মিন্নি গণমাধ্যমের কাছে কাঁদতে কাঁদতে দাবি করেন, আমার চোখের সামনেই আমার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তারা। অনেক চেষ্টা করেও স্বামীকে বাঁচাতে পারিনি আমি। আমি তাদের বিচার চাই।

গত শুক্রবার থেকে রিফাত ও মিন্নির বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ জানায়, মিন্নি এ মামলার প্রধান সাক্ষী। তার নিরাপত্তার জন্য তার বাড়ির বাইরে পুলিশ রাখা হয়েছে।

দেশব্যাপী আলোচিত ওই হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলার প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। ওইদির ভোররাতে বরগুনার পুরাকাটা এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নয়ন বন্ডের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print