শনিবার, ১২ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শনিবার, ১২ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শনিবার, ১২ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৬ই মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

পটুয়াখালীতে সালিশী বৈঠকে কিশোরীকে নিজেই বিয়ে করলেন বিবাহিত বয়স্ক চেয়ারম্যান

প্রভাতী ডেস্ক : দুই কিশোর-কিশোরীকে নিয়ে ডাকা সালিসে কিশোরীকে (১৪) পছন্দ হওয়ায় নিজেই দ্বিতীয় বিয়ে করলেন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার (৬০)।

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ১৪ বছরের ওই কিশোরীকে প্রাপ্ত বয়স্ক দেখিয়ে বিয়ে করেন শাহিন হাওলাদার। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তার প্রথম স্ত্রীর সংসারে এক ছেলে, ছেলের স্ত্রী ও এক মেয়ে আছে।

শুক্রবার(২৫ জুন) রাতে আয়লা গ্রামে নিজের বাড়িতে কাজী ডেকে ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন শাহিন হাওলাদার। তখন তার প্রথম স্ত্রী পটুয়াখালী জেলা শহরের বাসায় ছিলেন।

স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ১৪ বছর বয়সী ওই কিশোরীর সঙ্গে একই এলাকার ১৯ বছর বয়সী এক কিশোরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুজনের পরিবারের সম্মতি না থাকায় বৃহস্পতিবার রাতে তারা বাড়ি ছেড়ে পালায়। বিষয়টি কিশোরীর বাবা কনকদিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে জানালে তিনি কিশোরের ভাইকে শুক্রবার তার ইউপি অফিসে ডেকে পাঠান।

কিশোরের বড় ভাই জানান, চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের নির্দেশে শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে উভয় পরিবারের লোকজন কিশোর-কিশোরীসহ ইউপি অফিসে উপস্থিত হয়েছিলাম। সেখানে মেয়েটিকে দেখে চেয়ারম্যানের পছন্দ হয়। তিনি মেয়েটিকে বিয়ে করার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং উভয়পক্ষকে এই বিয়ে নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দেন।

কিশোরের বড় ভাইয়ের দাবি, সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে দুপুরের দিকে অফিস থেকে তাদেরকে বের করে দেন চেয়ারম্যান।

এরপর রাত নয়টার দিকে কাজী ডেকে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন চেয়ারম্যান। বিয়ের কাবিননামায় মেয়েটির জন্ম তারিখ উল্লেখ করা হয় ২০০৩ সালের ১১ এপ্রিল। কিন্তু স্কুলে জমা দেওয়া জন্মনিবন্ধন পত্র ও পঞ্চম শ্রেণি পাসের সনদ অনুযায়ী, ওই কিশোরীর জন্মতারিখ ২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল। বিয়ের পর কিশোরীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান চেয়ারম্যান।

কিশোরীর বাবা নজরুল ইসলাম পেশায় শ্রমিক। তিনি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে মেয়ের বাড়ি থেকে পালানো এবং চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন।

এই বিয়ের কাজী আবু সাদেক বিয়ে পড়ানোর কথা স্বীকার করে বলেন, ‘জন্মনিবন্ধন দেখে বিয়ে পড়িয়েছি’। এ বিষয়ে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘মেয়ে পক্ষের সম্মতি নিয়ে নিজের প্রয়োজনে মেয়েটিকে বিয়ে করেছি। জোর করে বিয়ে করিনি।’ মেয়ের বয়স ১৮ বছর হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন দ্য বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যানের বিয়ের খবর শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print