Search

রবিবার, ২০শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রবিবার, ২০শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রবিবার, ২০শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪শে মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

আগ্রাবাদের পতিতালয়ে নারী দিয়ে ফাঁসিয়ে অর্থ আদায় ও ছিনতাই চক্রের ৬ সদস্য আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ মোগলটুলি এলাকার কাটা বটগাছ মোড়ের জাফর সওদাগরের বিল্ডিংয়ের আক্তারের ভাড়া ঘরে দিনভর চলত দেহব্যবসা। সন্ধ্যা নামলেই সেখানে বসে মাদকের আসর। এলাকার রাজনৈতিক পরিচয়ধারী ২ জনের নিয়ন্ত্রণে চলে এসব অপকর্ম। তাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন আরো ৬জন।

সোমবার (১৭ মে) দিবাগত রাতে এক ব্যক্তির ছিনতাই হওয়া মোবাইল উদ্ধার করতেই এই ভয়ঙ্কর চক্রের সন্ধান পায় ডবলমুরিং থানা পুলিশ। সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয় মোট ৬ জনকে। তাদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী দুই ব্যক্তি বাদি হয়ে একটি ছিনতাই ও একটি মানবপাচার আইনে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেন।

গ্রেফতাররা হলেন— মো. আক্তার হোসেন (৬৩), আবু হোসেন টিপু (২৯), মো. মজিবুল বশর রাজু (২০), মো. আলমগীর হোসেন আলম (৩৫), মো. ইকবাল হোসেন জুয়েল (৩১) ও মো. বেলাল খান (৩১)।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল ভুক্তভোগী এক ব্যক্তিকে অসৎ উদ্দেশ্যে বাসায় ডেকে নিয়ে যায় চক্রের কয়েকজন সদস্য। পরে সেখানে ভয় দেখিয়ে তার মোবাইল ও মানিব্যাগ নিয়ে নেয়। এ ঘটনার দু’দিন পর ভুক্তভোগী ব্যক্তি কয়েকজনের সহযোগিতায় ওই বাসার দিকে আবার যায়। একপর্যায়ে আগের ঘটনায় জড়িত থাকা এক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে থানায় ফোন দেয়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ গিয়ে মো. ইকবাল হোসেন জুয়েল নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ জানায়, ইকবালকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি ছিনতাই কার্যক্রম নিজে এবং আরো কয়েকজন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তারপর বাকি আসামিদের গ্রেফতার করতে তার দেখানো বাসায় গিয়ে এবার পতিতালয়ের সন্ধান পায় পুলিশ। বাসা থেকে ইকবালের ৫ সহযোগীকে গ্রেফতারের পাশাপাশি উদ্ধার করা হয় দু’জন তরুণীকে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তরুণীরা জানিয়েছেন, তাদেরকে চাকরি দেয়ার কথা বলে গ্রেফতারদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন অন্য দুই যুবক। তরুণীদের ১জন বাদি হয়ে মোট আটজনের বিরুদ্ধে ডবলমুরিং থানায় মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত ৬জন ও পলাতক আরো দু’জনসহ মোট ৮জনের চক্রটির ২জন বিভিন্ন এলাকা থেকে গরিব ও অসহায় তরুণীদের চাকরির প্রলোভনে শহরের বাসাটিতে আনে। তারপর বাকি ছয়জনের সহযোগিতায় তাদেরকে দিয়েই জোর করে চালায় দেহব্যবসা।

এছাড়াও সেখানে আসা খদ্দেরদের কার্যক্রম গোপনে ভিডিও করে। তারপর এসব ভিডিও প্রকাশ করে দেয়ার হুমকি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। আবার যারা একটু নিম্নবিত্ত তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ও মানিব্যাগ রেখে দেয়। এই টাকা দিয়ে সন্ধ্যায় সেখানে মাদকের আসর বসানো হয়।

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছিনতাই হওয়া মোবাইল উদ্ধার করতে গিয়ে দুই তরুণী উদ্ধারের পাশাপাশি দেহব্যবসা ও ছিনতাই কার্যক্রমে জড়িত চক্রের ৬সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চক্রের ২ সদস্য পলাতক রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দু’টি সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করে ১৮ই মে (মঙ্গলবার) আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও গ্রেফতার ৬ জনের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।’

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print