বুধবার, ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বুধবার, ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ বুধবার, ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে শাবান ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে আবারো শিশু মৃত্যুর অভিযোগ!

নিজস্ব প্রতিবেদক: খিঁচুনি ও জ্বরের কারণে ১৭নভেম্বর ১বছর বয়সী ফুটফুটে শিশু জারিন সারওয়ার প্রিয়কে ভর্তি করা হয় নগরীর বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে। কিন্তু সেই ভর্তিই তার জীবন কেড়ে নিবে কে জানত?

প্রিয়’র পরিবারের অভিযোগ একটি অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন শরীরে পুশ করার পরপরই শিশুটি ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায় এবং একপর্যায়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। অথচ মৃত্যুর ঘণ্টাখানেক আগেও শিশুটি মায়ের কোলে খেলা করছিল। ভুল চিকিৎসায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, প্রিয় ম্যানিনজাইটিস বা মস্তিস্কের প্রদাহজনিত রোগে আক্রান্ত ছিল। ভর্তির পর সে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক নেফ্রলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সনৎ কুমার বড়ুয়ার অধীনে চিকিৎসাধীন ছিল।শিশুটির মামা রিমন শাহ সুমন বলেন, ‘প্রিয় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে আসছিল। গত (বুধবার) রাতেও সে ভালো ছিল। সকালেও খেলা করেছে। টেস্ট রিপোর্টে ম্যানিনজাইটিস পজিটিভ আসার পর চিকিৎসক সনৎ কুমার বড়ুয়া তাকে অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন দেওয়ার জন্য প্রেসক্রাইব করে যান। এরপর তাকে কেবিনে নেওয়ার কথা ছিল। ইনজেকশন দেওয়ার আধঘণ্টা পর সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে।’

শিশুটির হঠাৎ মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছেন না তার পরিবারের সদস্যরা। তার মা ব্যাংক কর্মকর্তা ও লেখিকা মোহছেনা আক্তার ঝর্ণা হাসপাতালে আর্তনাদ করতে থাকেন। তিনি কান্না করতে করতে বলেন, ‘আমার ছেলেটা সকালেও আমার বুকে খেলা করেছে। অ্যান্টিবায়েটিকটা দেওয়ার পর সে সহ্য করতে পারেনি। আমার ভালো ছেলেটা মারা গেল।’ তবে পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ করা হয়নি বলে জানা গেছে সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী।

এদিকে ম্যাক্স হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী মিডিয়ার কাছে বলেন, ‘আমি ঘটনা শোনার পর নিজে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি। চিকিৎসা যেটা হয়েছে একেবারে সঠিক চিকিৎসা। ম্যানিনজাইটিস রোগটাই এমন যে, কখনো একটু ইমপ্রুভ করবে, কখনো আবার একটু অসুস্থ হবে। ইনজেকশন দেওয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে, এটি সঠিক নয়। জারিনের বাবা শামীম আহমেদ ও মা মোহছেনা আক্তার ঝর্ণা আমাদের হাসপাতাল থেকে যাওয়ার সময়ও এমন দাবি করেননি, কোনো অভিযোগও করেননি।’

প্রিয়’র মা-বাবা জানান, ‘কোন ইনজেকশনটা প্রিয়’র শরীরে পুশ করা হয়েছে তা না দেখিয়ে লুকিয়ে ফেলা হয়। ফাইল থেকে সরিয়ে ফেলা হয় ট্রিটমেন্টের কাগজপত্রও।’ এছাড়া তারা টাকা পরিশোধ করতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টাকাও নেয়নি।

প্রসঙ্গত, একবছর আগে একই হাসপাতালে জ্বর ও গলাব্যথা নিয়ে ভর্তি হওয়া সাংবাদিক রুবেল খানের শিশুকন্যা রাফিদা আক্তার রাইফা’র মৃত্যু হয়। তখন ভুল চিকিৎসার অভিযোগে ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও দায়ী চিকিৎসকদের বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন সাংবাদিকরা। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের টিম হাসপাতালে অভিযানও চালিয়েছিল। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print