
চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দোকান জবরদখল করতে এক নারীর উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর হামলার ঘটনা ঘটলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। দোকান দখলের ঘটনাকে তুচ্ছ দাবী করে ওসি বলেন মামলা নেওয়ার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি।
জানা যায়, বায়েজিদ থানাধীন অক্সিজেন পাঠান পাড়ায় মৃত ইদ্রিসের খরিদা সূত্রে মালিকানাধীন ৬শতক জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসতেছে । উক্ত জমিতে প্রতিপক্ষ যেন অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেই বিষয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু গত ১৬ই জানুয়ারি তোফাজ্জলের ছেলে ইব্রাহিম উক্ত নিষেধাজ্ঞাকৃত জমির উপর স্থিত ২টি দোকান দখলে নিতে গেলে ইদ্রিসের মেয়ে শাহনাজ বাঁধা দিলে ইব্রাহিমের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তার উপর বর্বর হামলা চালায়। হামলার ঘটনার ১মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায় ইব্রাহিম সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে দোকান দখল করতে আসলে শাহনাজ বেগম ইফা বাঁধা দিয়ে দোকানের সামনে একা দাঁড়িয়ে থাকে। ইব্রাহিম তাকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিলে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা মারধর করতে থাকে। কয়েকজন সন্ত্রাসী এসময় ইব্রাহিমের নির্দেশে দোকানের তালা ভেঙে দোকান দখলে নেয়। ইব্রাহিম অকথ্য ভাষায় গালি দিতে দিতে একটি গ্যাস সিলিন্ডার হাতে বারবার মহিলার দিকে তেড়ে আসতেছিলো। এসময় তাদের তান্ডবে আশপাশের পরিবেশ স্তব্ধ হয়ে যায়।

এই জঘন্য ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলেও অজানা কারণে ইব্রাহিম ও তার ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের কাউকে আটক না করে ফিরে যায়। ভিকটিম চট্টগ্রাম মেডিকেলের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে মামলা করতে সন্ধ্যায় বায়েজিদ থানায় গেলে ওসি পরদিন যেতে বলেন। পরদিন ১৭ জানুয়ারী আবার গেলে দীর্ঘ অপেক্ষার পর রাত ১১টার দিকে মামলা না নিয়ে জিডি করতে বলেন। ভিকটিম বিষয়টি ১৮ জানুয়ারি বায়েজিদ জোনের এসিকে জানালে ওসি ভিকটিমকে রাত ৮টায় ডেকে নিয়ে উনার রুমে বসিয়ে হুমকি দেন বিষয়টি রাত ১০টার মধ্যে বসে আপোষ করতে। আর না হলে উল্টো মহিলার বিরুদ্ধেই মামলা নিবে। মহিলার হাত থেকে তার মোবাইল ফোন নিয়ে বিভিন্ন কিছু দেখে মোবাইল ফেরত দেয়। ভিকটিমের সামনেই হামলাকারীদেরকে পরামর্শ দিলেন মহিলার বিরুদ্ধে কালকে এলাকায় মানববন্ধন করতে, এরপর বাকী যা করার ওসি নিজেই করবেন।
এই বিষয়ে ভুক্তভোগী শাহনাজ বেগম ইফা বলেন, ইব্রাহিমের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে আমাকে গুরুতর জখম করে দোকান দখল করলো। আমার হাতে থাকা নগদ টাকাসহ পার্স ছিনিয়ে নিলো মামলা না করার হুমকি দিলো এরপরেও ওসি বলতেছেন মামলা নেওয়ার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।