বুধবার, ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বুধবার, ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ বুধবার, ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে শাবান ১৪৪৬ হিজরি

বিএনপি-জামায়াত-সুশীল মিলে আওয়ামীলীগকে হারাতে পারবে না-জয়

প্রভাতী ডেস্ক : সকল বাধা-বিপত্তি মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ আজকের যে অবস্থানে এসেছে, এখান থেকে সহজেই দলটিতে সরানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি বলেছেন, ‘জনগণকে জরিপ করে আমি জানি, বাংলাদেশের মানুষ এখন আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেই।’

জয় বলেন, ‘বিএনপি-সুশীল-জামায়াত এক হলেও বাংলাদেশে কোনো শক্তি নাই আওয়ামী লীগকে ভোটে হারাতে পারবে। তাই আমাদের আর কোনো ভয় নেই। আওয়ামী লীগ এখন কাউকেই ভয় পায় না। সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আমরা এই পর্যায়ে এসেছি, আওয়ামী লীগকে সরানো এত সহজ নয়।’

শনিবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে সূচিন্তা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘২১ শে আগস্ট : বাংলাদেশের রাজনীতির বর্তমান-ভবিষ্যত’ শীর্ষক আলোচনায় সজীব ওয়াজেদ জয় এসব কথা বলেন।

২১ শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলার রায় বাস্তবায়নের অঙ্গিকার জানিয়ে আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কোর কমিটির সদস্য সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় বাস্তবায়ন করেছি, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের রায় বাস্তবায়ন করেছি, ২১ আগস্টের বিচার করেছি এবং রায়ও বাস্তবায়ন হবে। তারেক রহমানকেও আমরা দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা দেবো, এটা আমাদের ওয়াদা।’

নির্বাচনের কয়েকমাস আগে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমালোচনা করে জয় বলেন, ‘২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার সঙ্গে যে বিএনপি, তারেক রহমান এবং হাওয়া ভবন জড়িত এই কথা কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেই প্রকাশ হয়। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাথে এই কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনরা জড়িত ছিল। মঈনুল হোসেন ছিলেন আইনমন্ত্রী। তখন ২১ আগস্টের হুকুমদাতা তারেক রহমানকে সামরিক বাহিনী গ্রেপ্তার করে। তবে সেই ১/১১ এর সরকারের সময় কারা তাকে ছেড়ে দেয়, দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। এই আজকের ঐক্যফ্যন্টের লোকজন। এই মইনুল হোসেন, সে নিজে তারেক রহমানকে দেশে থেকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। এ থেকে প্রমাণ হয় তখন থেকেই তারা তারেক রহমানের সাথে আঁতাত করে বসে আছে। এই ঐক্যফ্রন্ট সেই ১/১১ থেকে তারেক রহমানের সাথে ষড়যন্ত্রে জড়িত, এটা আজকে আবার প্রমাণ হলো।’

ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘এই ঐক্যফ্রন্ট নিরপেক্ষতার কথা বলেন। সন্ত্রাস-মানুষ হত্যাকাণ্ড এই নিয়ে কী কোনো নিরপেক্ষতা হতে পারে? তাহলে তারা একথা কীভাবে বলে? যারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বলতে লজ্জা পায় তারা সন্ত্রাসকে আশ্রয় দিচ্ছে। আমাদের এই সুশীল বাবুরা বলে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে। কিসের থেকে রক্ষা করতে হবে।’

জয় বলেন, ‘দেশের মানুষ শান্তিতে আছে, ২১ আগস্টের মতো হত্যাকাণ্ড আর হচ্ছে না। বাংলাদেশকে আসলেই জঙ্গি দল বিএনপি থেকে রক্ষা করা প্রয়োজন। তাদের হাত থেকে রক্ষা করায় বাধা দিচ্ছে এখন ঐক্যফ্রন্ট। ঐক্যফ্রন্টের চেষ্টা হচ্ছে বিএনপিকে পুর্নবাসন করা।’

সজীব ওয়াজেদ জয় প্রশ্ন করে বলেন, ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যত কী হবে? ২১ আগস্টের হত্যাকারী তারেক রহমানকে কি আমরা ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চাই? এটাই কী চাই? আমাদের সুশীলরা তো মনে হচ্ছে সেটাই চায়। না, সেটা আমরা হতে দেবো না।’

তিনি বলেন, ‘যারা একটি ভোট পায় না তাদেরকে আমরা ভয় পাই না। কারণ, আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র মানুষের ভোটে ক্ষমতায় এসেছে। বন্দুকের নল দিয়ে কোনোদিন ক্ষমতায় আসেনি। এই সুশীল বাবুদের হুমকিতে আওয়ামী লীগের কিছু যায় আসে না।’

ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে দলটির নেতাদের এমন অভিযোগের বিষয়ে জয় বলেন, ‘আমি তো তাদের বলব, তাদের শোকর করা উচিত যে আওয়ামী লীগ বিএনপি না। বিএনপি মাত্র পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগের কতজন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। বিএনপি যদি আমাদের মতো ১০ বছর ক্ষমতায় থাকত তাহলে আওয়ামী লীগের কেউ বেঁচে থাকতো? একটি নেতাও বেঁচে থাকতো না।’

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে বলেন, ‘যারা মানুষ হত্যা করে, যারা জঙ্গি পালন করে, যারা ২০১৩ সালে আমাদের দেশের শত শত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে, আমরা অবশ্যই তাদেরকে গ্রেপ্তার করব। এখানে কোনো ছাড় হবে না। যারা ২১ আগস্টের হত্যাকারীদের সাথে হাত মেলাবে, সেই ষড়যন্ত্রের সাথে জাড়িত অবশ্যই আমরা তাদেরকে গ্রেপ্তার করব।’

সুশীল সমাজের সমালোচনা করে জয় বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যদি বিএনপির মতো হতো, তাহলে আমরা আদালতে যেতাম! আজকে যদি আমার চরিত্র তারেক রহমানের মতো হতো, তাহলে কি আজকে বেগম খালেদা জিয়া শুধুমাত্র জেলে থাকতেন? না। এই কথা তাদের মনে রাখা উচিত। আমাদের চরিত্র তাদের মতো না। আমরা খুনি না। আমরা সন্ত্রাসী দল না। স্বাধীনতার দল।’

২১ আগস্টের ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র জয় আরও বলেন, ‘২১ শে আগস্টের আগে রাজনীতির সাথে আমি জড়িত ছিলাম না। এর অনেক বছর পর আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি, রাজনীতিতে পা দিই। কারণ, সেইদিন আমি ওয়াদা করেছিলাম এই বিএনপি সরকারকে আমি ক্ষমতা থেকে বের করবই, করব।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন— সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক মেসবাহ কামাল, সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সূচিন্তা ফাউরেন্ডশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ আরাফাত।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print