প্রভাতী ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি ছাত্রসংগঠন একজোট হয়ে ‘সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্য’ নামে একটি সংগঠনের ঘোষণা দিয়েছে। এই প্ল্যাটফর্ম সন্ত্রাসী, সাম্প্রদায়িক ও স্বৈরাচারী শক্তির বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্য’ সংগ্রাম পরিচালনা করবে।
শুক্রবার(২৭ডিসেম্বর) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্ল্যাটফর্মের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
জোটভুক্ত সংগঠনগুলো হচ্ছে– বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র ফেডারেশন, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, স্বতন্ত্র জোট এবং ছাত্র গণমঞ্চ।
এদিকে ছাত্রদলকে জোটে রাখা হয়নি। এ বিষয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আল কাদেরী জয় বলেন, ছাত্রদলের অতীত ইতিহাস ভালো না। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তারাও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সবকিছু বিবেচনায় আমরা ছাত্রদলকে এই সংগঠনের বাইরে রেখেছি।
তিনি আরো বলেন, গত ২২ ডিসেম্বর এক ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ এবং তার ছায়া সংগঠন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। প্রশাসনের মদদ ছাড়া এই হামলা কখনো সম্ভব না। এর জন্য দায়ী প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি আর ভিসির অপসারণের জোর দাবি জানাচ্ছি। সময় এখন ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। দখলদারিত্ব নির্মূল করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি আল কাদিরি জয়, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতারা।
আখতার হোসেন বলেন, ‘ক্যাম্পাসে চলমান সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব ও সহিংসতার অবসানের জন্য ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া এখন সময়ের দাবি। এ অবস্থায়, গণতান্ত্রিক শিক্ষাঙ্গন ও ছাত্র সমাজের স্বার্থে আন্দোলনকারী গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল ১২টি ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘সন্ত্রাস বিরোধী ছাত্র ঐক্য’ আজ (শুক্রবার) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করছে।’
এ সময় চার দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দফাগুলো হল- নুরুল হক নুরসহ সব শিক্ষার্থীর ওপর হামলাকারীদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও আইনানুগ বিচার করতে হবে, ব্যর্থতার দায়ে প্রক্টরকে অপসারণ করতে হবে, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং হামলায় আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার প্রশাসনকে বহন করতে হবে, ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং হলে হলে দখলদারিত্ব, গেস্টরুম-গণরুম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।
ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক বলেন, ‘অতি সম্প্রতি ডাকসু ভবনে ঢুকে ভিপি নুরুল হক নুরসহ শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা করা হয়েছে। হামলার দিন আমাদের নেতারা প্রক্টরকে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগী হওয়ার কথা বললে তিনি যথাসময়ে সেখানে উপস্থিত হননি বরং উল্টো ধমক দিয়ে কথা বলেছেন। তার এই আচরণে এটা স্পষ্ট করে যে, তিনি হামলাকারী মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের মদতদাতা এবং সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছেন। অর্থাৎ ছাত্রদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত প্রক্টর দায়িত্ব পালনে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি লাগানো হয়েছে, অথচ সেই সিসিটিভির ফুটেজ তিনি রক্ষা করতে পারেন না। উপরন্তু তিনি হামলাকারীদের পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এরকম একজন নিষ্ঠুর অমানবিক ব্যক্তি কোনোভাবেই প্রক্টরের পদে বহাল থাকতে পারেন না।’