
প্রভাতী ডেস্ক: দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর ধরে জুমার নামাজের খুতবায় পাওয়া যাচ্ছে না খতিব মাওলানা সালাহউদ্দিনকে। তাঁর অনুপস্থিতিতে জুমার নামাজ পড়াচ্ছেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমামগণ। কিন্তু দায়িত্ব পালন না করেও গত সাড়ে ৪ বছর ধরে নিয়মিত বেতন-ভাতা নিচ্ছেন বিতর্কিত এই খতিব।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, খতিব সালাহউদ্দিন চিকিৎসার জন্য ভারত গমনের উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৪৫ দিনের ছুটি নেয়ার পর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত এবং তিনি এরপর আর কোনো খুতবা দেননি।
এদিকে সিভিল অডিট অধিদফতর কর্তৃক পরিচালিত নিরীক্ষা প্রতিবেদনে দেখা যায়, সাড়ে ৪ বছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও খতিব সালাহউদ্দিনের বেতন ভাতা বাবদ ২৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তিনি গত ২০১৫ সালে চিকিৎসার জন্য বিদেশ গমনের নিমিত্তে ছুটির আবেদন করলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক তাকে ১৫/০৯/২০১৫ থেকে ২৯/১০/২০১৫তারিখ পর্যন্ত ছুটি মঞ্জুর করেন। সেই হিসেবে তিনি ৩০/১০/১৫ তারিখে ছুটি শেষে কাজে যোগ দেয়ার কথা। কিন্তু ছুটির পর থেকে তিনি এখনো পর্যন্ত অনুপস্থিত রয়েছেন। তবে তাঁকে নিয়মিত বেতন পরিশোধ করা হচ্ছে এবং নিচ্ছেন।
তবে খতিবের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, তিনি দীর্ঘ দিন ধরে হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত রোগে শয্যাশায়ী। তার পক্ষে স্বাভাবিক কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই তিনি বায়তুল মোকাররমে অনুপস্থিত রয়েছেন।
কিন্তু অসুস্থ হলে এবং দায়িত্বপালনে অক্ষম হলে দায়িত্ব থেকে তিনি কেন অব্যাহতি নিচ্ছেন না, বেতন-ভাতাই-বা কীসের ভিত্তিতে গ্রহণ করছেন, এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি কারো কাছ থেকে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি খতিব হিসেবে নিয়োগ পান মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল, মহাখালী মসজিদে গাউসুল আজমের খতিব প্রফেসর মাওলানা সালাহউদ্দিন। তাঁর নিয়োগের পর তাঁর বিরুদ্ধে বায়তুল মোকাররমে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। তখনকার সিনিয়র পেশ ইমাম ও ভারপ্রাপ্ত খতিব মাওলানা নূর উদ্দিনকে খতিব করার দাবিও ওঠে। এ নিয়ে পর পর কয়েক জুমার নামাজে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যে মাওলানা সালাহউদ্দিন খুতবা দেয়া অব্যাহত রাখলে পরিস্থিতি আস্তে আস্তে শান্ত হয়। কিন্তু কওমি আলেমদের বড় একটি অংশ তখন থেকে বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ বর্জন করে আসছেন।