নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের পটিয়া ও কর্ণফুলীতে এক মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ওমরাহ হজ্বের নামে ২৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উক্ত প্রতারক ওমর ফারুক জব্বারী পটিয়া উপজেলার আর্শিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ আর্শিয়া গাউসিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং আল জব্বারী হজ্ব কাফেলার স্বত্বাধিকারী। প্রতারণার শিকার হয়ে বৃহস্পতিবার ওমরাহ পালন করতে যাওয়ার জন্য চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে ফেরত যান ২৩ ওমরাহ হজ্বযাত্রী। এর মধ্যে কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের সৈন্যেরটেক এলাকার একই পরিবারের ৯ জন প্রতারণার শিকার হন। হজ্ব কাফেলাটির কার্যালয় চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা এলাকায় বলা হলেও বাস্তবে সেটার কোথাও অস্তিত্ব নেই।
ভূক্তভোগী কামরুন নাহার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্মর) ওমরাহ হজ্বের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে যাই। সেখানে গিয়ে আমরা প্রতারণার শিকার হয়ে ফেরত আসি। আমিসহ পটিয়া ও কর্ণফুলী উপজেলার মোট ২৩ জন প্রতারণার শিকার হয়েছি। আমি পটিয়া উপজেলার শাহচাঁন্দ আউলিয়া কামিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক মাওলানা হামিদুল হকের মাধ্যমে আল-জব্বারী হজ কাফেলায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জমা দিই। জব্বারী হজ কাফেলার স্বত্বাধিকারী মাওলানা ওমর ফারুক জব্বারী গত ১৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর নন্দনকানন এলাকায় পুলিশ প্লাজার অষ্টম তলায় একটি হোটেলে আমাদের হজ্ব গমনকারীদের কর্মশালা করান। পরে গত বুধবার আমাদের হাতে বিমানের টিকিট ও ভিসা দেওয়ার কথা থাকলেও রাতে অধ্যক্ষ জানান, বৃহস্পতিবার সকালে টিকিট ও ভিসা প্রদান করবেন। তার কথার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সকালে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দিই। আমাদের ফ্লাইট বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বলে জানান মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ওমর ফারুক জব্বারী। কিন্তু অধ্যক্ষ ওইদিন আমাদের পাসপোর্ট ও টিকিট কিছু না দিয়ে মোবাইল বন্ধ রাখে। পরে যোগাযোগ করতে না পেরে দীর্ঘ ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর আমরা বাড়িতে চলে আসি।’
ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে দক্ষিণ আর্শিয়া গাউসিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ওমর ফারুক জব্বারী মোবাইলে বলেন, ‘যাদের সাথে সমস্যা হয়েছে তাদেরকে টাকা ফেরত দিব। আর কয়েকজনকে ২৯ তারিখ যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিব। পত্রিকায় নিউজ করে আমার সম্মান এবং ব্যবসার ক্ষতি করিয়েন না।’
উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হক রাশেদ বলেন, আমার দুই স্বজনও প্রতারণার শিকার হয়েছেন। মাওলানা আবদুল জব্বার নিজের নামে রেজিস্ট্রেশনবিহীন হজ্ব কাফেলা খুলে ২৩ জনের কাছ থেকে জনপ্রতি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা করে মোট ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পবিত্র ওমরাহ পালনের নামে এ প্রতারকের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান বলেন, ‘এ ধরনের প্রতারকচক্র ধরার জন্য প্রশাসন তৎপর রয়েছে। মৌখিক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে পেলেও এখনও পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’