বৃহস্পতিবার, ৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বৃহস্পতিবার, ৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ বৃহস্পতিবার, ৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই শাবান ১৪৪৬ হিজরি

আগামী সপ্তাহ থেকে অনলাইন পোর্টালের নিবন্ধন শুরু-তথ্যমন্ত্রী

প্রভাতী ডেস্ক: আগামী সপ্তাহ থেকে সরকার অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিবন্ধন দেয়া শুরু করবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ।

সোমবার (২রা ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তথ্যমন্ত্রী এই কথা জানান। একই সঙ্গে পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে অনলাইন পরিচালনার জন্য অনুমোদন নিতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে যে অনলাইনগুলো আছে সেই অনলাইনগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনার জন্য দরখাস্ত আহ্বান করেছিলাম। আমাদের তথ্য মন্ত্রণালয়ে ৩ হাজার ৫৯৭টি দরখাস্ত জমা পড়েছে। সেগুলো তদন্ত করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠিয়েছিলাম। পরবর্তী সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, টেলিকম মিনিস্ট্রি, আইসিটি মিনিস্ট্রিসহ একটি সভা করেছিলাম।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছিলাম যত দ্রুত সম্ভব অনলাইনগুলোর ব্যাপারে তদন্ত শেষ করে আমাদের কাছে জানানোর জন্য, যাতে আমরা নিবন্ধনের কাজটি শুরু করতে পারি। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আজ বা কালকের মধ্যে তারা তদন্ত শেষ করে কয়েকশ অনলাইনের তথ্য আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেবে।’

‘আমরা আগামী সপ্তাহ থেকে অনলাইনের নিবন্ধন দেয়া শুরু করব। এ প্রক্রিয়া শেষ করতে কিছুদিন সময় লাগবে। ৩ হাজার ৬০০ অনলাইনের তদন্ত শেষ করা সহজ কাজ নয় এবং কয়েকটি সংস্থা তদন্ত করছে’- এমনটাই বলেন ড.হাছান মাহমুদ।

মন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যতেও যেন অনলাইন সংবাদ পোর্টাল কেউ করতে পারে, সে জন্য আমরা পরবর্তী সময়ে আবার দরখাস্ত আহ্বান করব, কারণ এখানে যে অনলাইনগুলো আছে, সেগুলোতেই তো এই মাধ্যম শেষ হয়ে যেতে পারে না। পত্রিকা যেমন যে কেউ যেকোনো সময় বের করতে পারে, ভবিষ্যতে তেমনি অনলাইনও বের করতে পারে। কিন্তু ভবিষ্যতে অনলাইন পোর্টাল চালু করতে হলে একটি প্রক্রিয়ায় অনুমতির মাধ্যমে করতে হবে। পত্রিকা বের করতে চাইলে যেমন নামের ছাড়পত্র নিতে হয়, অনলাইনের ক্ষেত্রেও একটি প্রক্রিয়া অবলম্বন করে বের করতে হবে। আইপি টিভি, আইপি রেডিওর জন্যও আমরা দরখাস্ত আহ্বান করেছিলাম। এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সবাইকেই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।’

টেলিভিশনে ডাবিং করা বিদেশি সিরিয়াল প্রচারকে নিয়মনীতির আওতায় আনা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন টেলিভিশনে যে ডাবিং করা বিদেশি সিরিয়াল প্রচার করা হয়, সেগুলোর জন্য অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে এবং অনুমতির জন্য দরখাস্ত পড়েছে অনেক। এগুলো একটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে যাওয়া প্রয়োজন। দুই-তিন ঘণ্টার একটি ছবি যেমন মুক্তি পেতে হলে সেন্সর বোর্ড হয়ে আসতে হয়, তেমনি এসব সিরিয়াল, যেগুলোর কোনোটা ৫০, কোনোটা ৩০ পর্ব, আবার প্রতিটি পর্ব হচ্ছে এক বা আধা ঘণ্টার, অর্থাৎ একটি ছবি হয় দুই-তিন ঘণ্টা আর এগুলো একেকটা ৪০ থেকে ৫০ ঘণ্টা, সুতরাং এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া অনুমোদন দেওয়া সমীচীন নয়। সে লক্ষ্যে একটি বাছাই কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে গত ২৭ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মোবাইল ফোন কোম্পানি নানা ধরনের ভিডিও কনটেন্ট আপলোড করে ইউটিউব বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাড়ছে, আবার সেখানে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, সেখানেও তারা ব্যবসা করছে। এটির লাইসেন্স তাদের দেওয়া হয়নি। তাদের মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক পরিচালনা করার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এটি বন্ধ করার জন্য ইতিমধ্যে আমরা টেলিযোগাযোগ বিভাগকে চিঠি দিয়েছি, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বিষয়গুলো আলোচনা করেছি। এ ধরনের চলমান বিষয়গুলোর ব্যাপারে বিটিআরসি সিদ্ধান্ত নেবে। এটিকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর। কারণ, যে কেউ চাইলেই লাইসেন্সবিহীন ব্যবসা করতে পারে না।’

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, অনলাইন পত্রিকার ভিডিও কনটেন্ট এবং টিভি চ্যানেলগুলোর অনলাইন চালাতেও অনুমতি লাগবে। তিনি বলেন, ‘শুধু পত্রিকাগুলো যে অনলাইনে ভিডিও কনটেন্ট করছে তা-ই নয়, টেলিভিশনগুলোও আবার অনলাইন চালু করেছে। সেটিরও অনুমতি এখন পর্যন্ত নেই। সুতরাং সবকিছুকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনার জন্যই আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আপনারা দেখেছেন, ইতিমধ্যেই অনেক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ধীরে ধীরে এ ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’

ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেল প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইউটিউব, ফেসবুকসহ সবার সঙ্গে আলোচনা করেছি যে তাদের মাধ্যম ব্যবহার করে যে ব্যবসা হচ্ছে বা বিজ্ঞাপন যাচ্ছে, সেগুলোর ওপর শুল্ক ধার্যের বিষয়টা আসবে, আমরা এনবিআরের সঙ্গেও কথা বলেছি। কেউ যদি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে করে, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই দেশের আইন মেনেই তা করতে হবে।’

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print