মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই শাবান ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামের বিবিরহাট গরু বাজার : বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তুষ্ট ক্রেতা – বিক্রেতারা

এম.জিয়াউল হক : জমে ওঠেছে কোরবানীর পশু বিক্রয়ে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বিবিরহাট স্থায়ী গরু বাজার। বাজার ব্যবস্থা নিয়েও সন্তুষ্ট ক্রেতা- বিক্রেতারা। চট্টগ্রামের স্থানীয় ছোট-বড় গরুর পাশাপাশি কুষ্টিয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, মাগুরাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছে বড় বড় গরু। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে এইবার গরু না আসায় ভালো দাম পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করতেছেন ব্যাপারীরা।

১লক্ষ টাকার উপর গরু কিনলে সেটার সাথে একটি ছাগল উপহার দিয়ে ক্রেতাদেরকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছেন বিক্রেতারা। এছাড়া এই বাজারের বিশেষ আকর্ষণ হলো সম্পূর্ণ বাজার এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় রাখা।

চাঁপাই থেকে আসা এক গরু ব্যবসায়ী বলেন, ১০০টি গরু নিয়ে এই হাটে এসেছেন তিনি। প্রতি বছর তিনি এই হাটে আসেন। বিগত বছরের চাইতে এবারের বাজার ব্যবস্থা অনেক ভালো। এবারের হাট মালিক অনেক আন্তরিক। গরু রাখার জন্য খাইন/খুঁটি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তেমন কোন টাকা নেওয়া হচ্ছে না। তবে প্যান্ডেল এবং ডেকোরেশন বাবদ কিছু খরচ দিবেন তারা।

কুষ্টিয়া থেকে আগত গরু ব্যবসায়ী সেলিম বলেন, চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি হাটে তার গরু রয়েছে। অন্য হাটের চাইতে এই হাটের পরিচালনা অনেক সুন্দর। আইন-শৃঙ্খলা অনেক উন্নত। গরু বিক্রি কেমন হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন,এই পর্যন্ত ৪টি গরু তিনি বিক্রি করেছেন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২টা বড় গরুর সাথে তিনি ২টা খাসী ফ্রি দিয়েছেন। তার পূর্ব অভিজ্ঞতা মতে শেষ ২দিনই এই বাজারে বেচা-কেনার ধুম পড়ে বলে জানান।

গরু ক্রয় করতে আসা এক ক্রেতা জানান, বিবিরহাট চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গরু বাজার। প্রতি বছর তিনি এই বাজার থেকেই গরু কিনেন। মাঝখানে আরো ৩দিন সময় থাকার কারণে পরিস্থিতি বুঝার জন্য হয়তো ব্যাপারীরা একটু দাম বেশী বলতেছেন। এছাড়া আরো বাজার ঘুরে ঈদের ১/২দিন আগে তিনি গরু কিনবেন। বাজারের আইন-শৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

আরিফুল ইসলাম খাঁন

বাজারের ইজারাদার আরিফুল ইসলাম খাঁন বলেন, মূল বাজারে ৪ হাজার এবং আশেপাশে মিলে মোট ১৪ হাজার গরু রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। বাজারের জায়গা পাকা হওয়ায় গরু রাখতে অনেক সুবিধা, ২৪ ঘন্টা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা রয়েছে, ৫০০ জনের অধিক স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে, সম্পূর্ণ বাজার সিসি ক্যামেরার আওতাধীন, ডোগা/খুঁটি ব্যবসার কোন সুযোগ নেই। এছাড়া চসিক নির্ধারিত ৫% হাসিলের চেয়ে ১টাকাও বাড়তি নেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, চসিক এর অন্যতম একটি শর্ত হলো, ব্যাপারীরা তাঁদের গরুর গাড়ী ইচ্ছা অনুযায়ী যেকোনো হাটে নিতে পারবেন। কিন্তু তাঁর বাজারে আসার পথে অনেকে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও প্রশাসন এবং সংবাদকর্মীদের সচেতনতার কারণে গরু ব্যাপারীরা নির্বিঘ্নে হাটে আসতে পেরেছেন। শেষ পর্যন্ত সুন্দরভাবে বাজার পরিচালনার জন্য তিনি প্রশাসন এবং সংবাদকর্মীদের সহযোগীতা কামনা করেন। ১৪বছর ধরে গরু বাজার পরিচালনার সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও বিবিরহাটে এই প্রথম। তাঁর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি এই বাজারে একটি রেকর্ড সৃষ্টি করতে চান বলেও জানান।

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে বাজারে দায়িত্বরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল মোতালেব বলেন, সকল প্রকার বিশৃঙ্খলা এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার জন্য বাজারে সাদা পোশাকে প্রশাসনের লোকজন নিয়োজিত রয়েছে। ওসি স্যারসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিকভাবে বাজার মনিটরিং করতেছেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print