সানজিয়া শাবনাম: কৃষি এখন আর মাঠ পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়। এখন কৃষি ছাদে ছাদে ও বারান্দায় বিরাজমান। কৃষি ও কৃষক এখন বাংলাদেশের ঘরে ঘরে কিন্তু এখন ও যারা ছাদে বাগান ও বারান্দায় বাগান করবেন চিন্তা করছেন এই পর্বটি তাদের জন্য। এখনও এমন অনেক মানুষ আছে যারা মনে করেন মনের মত বাগান ছোট্ট পরিসরে করা সম্ভব নয় কিন্তু ‘ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়’ – এই ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপ দিতে জানতে হবে অনেক কিছু।
কৃষি কাজে যুক্ত হওয়া খুব সহজ কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত তথ্য জানা এবং গাছ চেনা। আসুন চেনা এবং জানার পর্বটি শেষ করি।
★বৃক্ষমেলা: বৃক্ষ মেলা হলেই ঘুরে আসুন বৃক্ষ মেলা থেকে, এতে করে বিভিন্ন গাছ চিনতে এবং গাছ সম্পর্কে জানতে পারবেন অনেককিছু। সার সম্পর্কেও অনেক তথ্য পেয়ে যাবেন মেলায়। তার চেয়ে বড় কথা সবুজকে ভালবাসতে শিখবেন,আপনার আগ্রহ অনেকটা বৃদ্ধি পাবে।
★হর্টিকালচার বা কৃষি গবেষনাগার-সরকারি এইসব প্রতিষ্ঠান থেকে গাছ পাবেন স্বল্প মূল্যে ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন খুব সহজে। এতে করে আপনার গুরুত্ব সবুজায়নে বৃদ্ধি পাবে অনেক গুণ। আপনি চাইলে নিজেও প্রশিক্ষকের ভুমিকা পালন করতে পারেন আশেপাশের মানুষকে কিছু পারিশ্রমিকের বিনিময়ে শিখিয়ে অথবা, পারেন নিজের ছোট্ট ছাদ নার্সারি করতে ঘরে বসে বাড়তি আয় কে না চাই? তা যদি হয় শখের আর কি লাগে?
★বিভিন্ন ব্লগ,গ্রুপ,বিভিন্ন ওয়েবসাইট কৃষি ব্লগ,ফেসবুক গ্রুপ থেকে পারেন গাছ সম্পর্কে ধারনা নিতে। গাছকে জানুন এবং চিনুন এতে করে ছাদ কৃষি বা, বারান্দায় কৃষি আরো সহজ হবে।
★বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা: কৃষি নিয়ে লিখে না এমন পত্র-পত্রিকা খুব কম। অনলাইনের বিভিন্ন পত্রিকা থেকেও নিতে পারেন ধারনা।
★ইউটিউব: ইউটিউব থেকে ভিডিও দেখে ও শিখে নিতে পারেন অনেক কিছু।
এবার কিছু কৃষি টিপস্ নতুনদের জন্য:
★রাসায়নিক সার ও জৈব সার চিনে রাখুন। জৈব সার প্রয়োগে গুরুত্ব বেশি দিন। রাসায়নিক সার কম ব্যবহার করুন।
★বারান্দায় বাগানের ক্ষেত্রে একবেলা রোদ পড়ে এমন জায়গা বাছাই করুন,দুবেলা হলে আরো ভাল।
★ঘরের এক কোনায় বালতি বা পত্র করে ব্যবহারকৃত চা পাতা,ডিমের খোসা,কলার খোসা জমিয়ে কম্পোস্ট তৈরী করে গাছের জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করুন।
★নিয়মিত খুব সকালে গাছে পানি দেওয়ার চেষ্টা করুন। যদি খুব সকালে দেওয়া সম্ভব না হয় তাহলে সূর্য ঢলে পড়ার পর পানি দিতে হবে। ঠিক দুপুর বা,কড়া রোদে গাছে পানি দেওয়া যাবে না।
★মাটি তৈরীর সময় মাটির তুলনায় গোবরের পরিমান বেশি হতে হবে।
★রাসায়নিক সারের ক্ষেত্রে বর্তমানে ট্যাবলেট সার বেশ জনপ্রিয়। এটির ব্যবহার করা খুব সহজ ও দামে সস্তা। এটি ব্যবহার করতে পারেন প্রয়োজনে।
★৭-১০দিন পর পর টব,বেড ও গাছের আশে পাশের মাটি ঝুরঝুরে করে দিন এতে গাছ ভাল থাকবে।
★কম আলো বাতাসে বা ঘরের ভিতরে ইনডোর প্ল্যান্ট রাখতে পারেন খুব সহজে।
★৩-৪মাস পর পর গাছ ছাটাই করুন এতে সব ডালে রোদ পড়বে এবং গাছের বৃদ্ধি বজায় থাকবে।
★বৃষ্টির সময় প্রয়োজন ছাড়া পানি দিবেন না। একটি কাঠের কাটি বা,ডাল দিয়ে মাটিতে পানির পরিমাণ যাচাই করতে পারেন।
★বাগানে প্রতিদিন এক ঘন্টা সময় দিলেই যথেষ্ট।
★বাগানের শুকনো ডাল পাতা ভাল করে শুকিয়ে গুড়ো করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে পারেন অল্প পরিমাণে।
★বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকামাকড় চিনে রাখুন এতে প্রথম আক্রমণে ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি।পরবর্তীতে ছাদ বাগানের নতুন কিছু টিপস নিয়ে আসব আপনাদের জন্য।ভাল থাকুন আপনি,ভালো থাকুক আপনার ছাদ বাগান।পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন।