রবিবার, ১১ই মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রবিবার, ১১ই মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রবিবার, ১১ই মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১২ই জিলকদ ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামে চিকিৎসকের আত্মহত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের, স্ত্রী মিতু আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্ত্রীর পরকীয়ায় অতিষ্ট হয়ে বৃহস্পতিবার চিকিৎসকের আত্মহত্যার ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানায় আত্মঘাতীর মা জোবেদা খানম বাদী হয়ে ৩০৬ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মামলায় আসামি হিসেবে মোস্তফা মোরশেদের স্ত্রী চিকিৎসক তানজিলা হক চৌধুরী মিতু (৩২), শ্বশুর আনিসুল হক চৌধুরী (৫২), শাশুড়ি শামীমা শেলী (৪৬), শ্যালিকা সানজিদা হক চৌধুরী আলিশা (২১), আমেরিকার নর্থ ক্যারোলিনা রাজ্যের ভারতীয় নাগরিক প্যাটেল ও ডা. মাহাবুবুল আলম (২৮) এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলা দায়েরের পূর্বে বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম নগরের নন্দনকানন এলাকার খালাতো ভাইয়ের বাসা থেকে আকাশের স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সিএমপির চান্দগাঁও থানার ওসি আবুল বাশার জানান, ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে নিহত চিকিৎসকের মা মামলা করেছেন। গ্রেপ্তার মিতুকে আদালতে নেয়া হচ্ছে। তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

এজাহারে বাদীনী আকাশের স্ত্রীর নৈতিক অধঃপতনের ফিরিস্তি তুলে ধরে ছেলেকে আত্মঘাতী হতে প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগ করেছেন।

এজাহারে আরো বলা হয়, আসামিরা মানসিক যন্ত্রণা ও উত্তেজনা সৃষ্টি করায় আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে মৃত্যুমুখে পড়েন মোস্তফা মোরশেদ আকাশ। ২০০৯ সালে তানজিলার সঙ্গে আকাশের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৬ সালে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশে আসা যাওয়ার মধ্যে ছিলেন তানজিলা। বিয়ের পূর্বে ও পরে তিনি আসামি প্যাটেল ও মাহাবুবের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখেন। তানজিলাকে বারবার শোধরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে অন্য আসামিদের চাপে পড়ে আত্মহত্যার করেন মোস্তফা মোরশেদ আকাশ।

আত্মহত্যার এক ঘণ্টা আগে ডা. আকাশ নিজের ফেসবুকে স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে একটি স্ট্যাটাস দেন, যাতে স্ত্রীর প্রতি ভালবাসার পাশাপাশি অভিমান এবং ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে।

ডা. আকাশের ফেসবুক প্রোফাইলে গিয়ে বেশকিছু স্ট্যাটাসে দেখা যায়, দাম্পত্য জীবনে তিনি অসুখী ছিলেন। এসব লেখায় তিনি স্ত্রীর ‘বহুগামিতা’র অভিযোগ এনেছেন। তা প্রমাণের জন্য একাধিক ছেলের সঙ্গে স্ত্রীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবিও দিয়েছেন।

তরুণ এই চিকিৎসক তার স্ত্রীর বখে যাওয়ার পেছনে শ্বশুর-শাশুড়ির ভূমিকাকেও প্রকাশ্যে এনেছেন, ‘আমার শাশুড়ি দায়ী এসবের জন্য, মেয়েকে আধুনিক বানাচ্ছে। একটু বেশি বানিয়ে ফেলেছে। উনি চাইলে এখনো সমাধান হতো।’

উল্লেখ্য, ডা. আকাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ভোরে নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার দুই নম্বর সড়কের ২০ নম্বর নিজ বাসা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বরকল এলাকার মৃত আবদুস সবুরের ছেলে। ডা. আকাশ শরীরে ইনজেকশন পুশ করে আত্মহত্যা করেন বলে জানা যায়।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print