প্রভাতী ডেস্ক: এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হলো আজ শনিবার ২ ফেব্রুয়ারি থেকে। নিয়মিত ও অনিয়মিত মিলে এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। আগামী ৫ মার্চ পর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষা চলবে। তবে দাখিল পরীক্ষা চলবে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। নকলমুক্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গত ২৭ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে একমাসের জন্য সব কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেও বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, মোট ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৭ লাখ ১০২ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। দাখিলে ৩ লাখ ১০ হাজার ১৭২ জন এবং ভোকেশনালে ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৯ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। গত বছরের থেকে ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ৪৩৪ জন।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সময় কেন্দ্রের ২০০ গজের ভেতরে বাইরের সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এছাড়া প্রশ্নফাঁস রোধে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে তৈরি বিশেষ নিরাপত্তা খামে করে কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা শ্রুতি লেখক সঙ্গে নিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। এ ধরণের পরীক্ষার্থীদের এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বৃদ্ধিসহ শিক্ষক, অভিভাবক বা সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় এসএসসি পরীক্ষা প্রদানের সুযোগ দেয়া হবে।
এদিকে এসএসসি ও সমমানের নকলমুক্ত ও সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের কিছু নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে এসএসসি, দাখিল, এসএসসি ভোকেশনাল ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট পূর্বে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোন শিক্ষার্থী দেরি করে কেন্দ্রে আসলে রেজিস্ট্রারের নাম, ক্রমিক নং ও বিলম্বের কারণ উল্লেখ করতে হবে। বিলম্বে আসা পরীক্ষার্থীদের তালিকা অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র সচিবকে জানাতে হবে।
পরীক্ষায় কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অননুমোদিত মোবাইল ফোন বা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুয়ায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এসএসসি, দাখিল, এসএসসি ভোকেশনাল ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষার প্রত্যেক কেন্দ্রে একজন নির্বাহী কর্মকর্তা বা ম্যাজিস্ট্রেট (ট্যাগ অফিসার) নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরা ট্রেজারী বা থানা থেকে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা তার প্রতিনিধিসহ প্রশ্নপত্র গ্রহণ করে পুলিশ প্রহরায় পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। নির্বাহী কর্মকর্তা বা ম্যাজিস্ট্রেটের (ট্যাগ অফিসার) উপস্থিতি ছাড়া প্রশ্ন বের করা যাবে না বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রনালয়।
ট্রেজারী বা নিরাপত্তা হেফাজত থেকে পরীক্ষা কেন্দ্র এমসিকিউ, রচনামূলক ও সৃজনশীল প্রশ্নের সকল সেট প্রশ্নই নিতে হবে। সেট কোড পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে জানিয়ে দেওয়া হবে। সে অনুযায়ী নির্ধরিত সেটকোডে পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার), কেন্দ্র সচিব এবং পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে এবং স্বাক্ষরে বিধি অনুয়ায়ী প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে।
এছাড়া এসএসসি, দাখিল, এসএসসি ভোকেশনাল ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষার কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালীন এবং এর আগে বা পরে পরীক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ছাড়া অন্যদের প্রবেশ সম্পূর্ন নিষিদ্ধ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।