মঙ্গলবার, ১৫ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মঙ্গলবার, ১৫ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ মঙ্গলবার, ১৫ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই রবিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি

বারান্দা ও ছাদ বাগানীদের জন্য কোকোপিট বা কোকোডাস্ট একটি জাদুকরী উপাদান

সানজিয়া শাবনাম: অনেকের কাছে কোকোপিট বা কোকোডাস্ট শব্দটি একদম নতুন, কিন্তু বেশ পরিচিত। এটি একটি জাদুকরী উপাদান যার গুনাগুন অতুলনীয়। কোকোপিট আমাদের দেশে সহজলভ্য হলেও অবহেলিত এবং পরিত্যক্ত। এই উপাদানের বিস্তারিত তথ্য আমরা খুব কম জানি কিন্তু বহির্বিশ্বে এর ব্যাপক চাহিদা ও ব্যবহার রয়েছে। আমরা নারকেলের ভিতরটা ব্যবহার করি,বাইরের ছোবড়াটা ফেলে দিই। অনেকে আবার আগুন জ্বালানো ও মশা তাড়াতে ধোঁয়া দেওয়ার কাজে ব্যবহার করে। নারকেলের এই অব্যবহৃত ছোবড়া ছাদ বাগানি,পাখি পালক এমনকি হাইড্রোপনিক্স পদ্ধতির জন্যও বেশ উপকারি ও মূল্যবান একটি বস্তু। এই কোকোপিট বাণিজ্যিকভাবে তৈরী এবং রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। শুধু তাই নয় আমাদের দেশের মাটির চাহিদা মিটানোও সম্ভব।

আসুন জেনে নিই কোকোপিট বা কোকোডাস্টের বিস্তারিত :
আমাদের দেশে নারকেল খুব সহজলভ্য ও জনপ্রিয়। নারকেলে ছোবড়ার আঁশ বা,শক্ত সুতার মত অংশটি আমরা পাখির ব্রিডিং এর সময় ব্যবহার করি। এটা থেকে কিছু গুড়ো পাওয়া যায় যা পাখালরা আলাদা করে শুধু আঁশটা পাখির জন্য ব্যবহার করে। অনেকেই আবার হস্তশিল্প ও অর্কিড রুপনে এই আঁশটা ব্যবহার করে। অব্যবহৃত রয়ে যায় গুড়োটা। সেই গুড়োকে বলা হয় কোকোপিট বা কোকোডাস্ট। কৃষাণের ভাষায় নারকেল তুষ। কোকোপিট বা নারকেল তুষ বেশ উপকারি উদ্ভিদের প্রয়োজনীয় সকল উপাদান রয়েছে এই কোকোপিটে, তাই একে জাদুকরী উপাদান বলা হয়। একে পঁচালে পাওয়া যায় সর্বোৎকৃষ্ট জৈব সার। বিভিন্ন দেশে কোকোপিট/ছোবড়া চুন ও মাশরুম স্পন্জ বা বীজ ব্যবহার করে থাকে,এতে ভাল ফলন হয় বলে জানা যায়।মাশরুম ফলন শেষে ব্যবহৃত সেই নারকেলের তুষ ও চুনের মিশ্রণটি সরাসরি জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।শুধু কোকোপিট দিয়েও বীজ থেকে চারা করা যায়।এছাড়া,হাইড্রোপনিক্স পদ্ধতিতে এখন পানি এবং প্রয়োজনীয় উপাদানের সাথে কোকোপিটের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে এর গুনগত মানের জন্য। অনেক গবেষনায় প্রমাণিত যে শুধু মাত্র কোকোপিট দিয়ে গাছের বৃদ্ধি ও ভাল ফলন হয়। তাই এটি মাটির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু শুধু কোকোপিট ব্যবহারে গাছ হালকা বাতাসে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। কিন্তু মাটির সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে সেই ভয়টা আর থাকে না।এতে গাছের কোনো ক্ষতি হয় না। কোকোপিট মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে,গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।কোকোপিট গাছের শিখড়কে রক্ষা করে। কোকোপিট ও জৈবসারের মিশ্রণ গাছের জন্য বেশ উপকারি।কোকোপিটের বিশেষ গুন হচ্ছে পানি ধারন ক্ষমতা। এটি দীর্ঘ সময় পানি ধরে রাখতে সক্ষম।গ্রীন হাউসে প্রতিনিয়ত কোকোপিটের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোকোপিট মাটির পিএইচ(ph)ব্যালেন্স ঠিক রেখে গাছের বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।গাছের গোড়ার মাটি রাখে ঝরঝরে।এটি অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনেও পারদর্শী।বিশেষভাবে ছাদ বা বারান্দায় বাগানিদের জন্য এটি খুব প্রয়োজন। এটি হালকা এবং মাটিকেও হালকা রাখতে সহায়ক।তাই এখন ছাদ বাগানের ভার নিয়ে ভয় নেই নিশ্চিন্তে ব্যবহার করুন কোকোপিট। ইদানিং বাজারে কোকোপিট ব্লক কিনতে পাওয়া যায় খুব সহজে।

পরবর্তী কৃষি টিপস পেতে আমাদের পেজে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন সব সময়।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print