
বাংলাদেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সমর্থকদের গ্রেপ্তারে সম্প্রতি সংশোধিত সন্ত্রাসবিরোধী আইনকে ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় নিউইয়র্ক-ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরেও তুলে ধরা হয়েছে সংস্থাটির প্রকাশিত তথ্য।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, বাংলাদেশে কর্মরত জাতিসংঘের মানবাধিকার দলকে নির্বিচারে আটক হওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানানো উচিত। একই সঙ্গে মানবাধিকার রক্ষা ও রাজনৈতিক সহিংসতায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে কার্যকর ভূমিকা নিতে উৎসাহিত করার আহ্বান জানানো হয়।
এইচআরডব্লিউ জানায়, টানা তিন সপ্তাহের সহিংস বিক্ষোভের পর ২০২৪ সালের আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয় এবং এর কয়েকদিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। সেই বিক্ষোভে প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয় বলে উল্লেখ করে সংস্থাটি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সংশোধিত সন্ত্রাসবিরোধী আইন ব্যবহার করে ২০২৫ সালের ১২ মে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। এর আওতায় দলটির পক্ষে যে কোনো সভা, প্রকাশনা ও অনলাইন বক্তব্য নিষিদ্ধ করা হয়। শান্তিপূর্ণ কর্মী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের গ্রেপ্তারেও আইনটি ব্যবহৃত হচ্ছে।
সংস্থাটির এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কারাগারে পাঠানো কিংবা শান্তিপূর্ণ মতপ্রকাশ দমন করার মতো পক্ষপাতমূলক আচরণ অন্তর্বর্তী সরকারের করা উচিত নয়। এগুলোই জনগণ শেখ হাসিনার সরকারের সময় ভোগ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরকে বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষায় অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তাই তাদের সমগ্র পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গ্রেপ্তারের ঘটনাগুলোর ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে হাজার হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানায় হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনেকের বিরুদ্ধে কেবল সন্দেহের ভিত্তিতে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। অসংখ্য মানুষ সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আটক রয়েছেন।
আটক ব্যক্তিদের কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন যে, পুলিশ হেফাজতে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে এবং চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযোগ শেখ হাসিনা সরকারের সময়কার নির্যাতনের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয় বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।