
প্রভাতী ডেস্ক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না। প্রয়োজনে যারা দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছে তাদের নিয়ে জাতীয় সরকার হবে। দেশের অর্থনীতি মেরামত করার জন্য সরকার কাজ করবেন। এ সরকার সব শেষ করে দিয়েছে , তা ঠিক করতে হবে।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) শনিবার বিকালে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগা মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এতদিন বলেছিলেন দেশ মধ্য আয়ের হয়েছে, সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়া হয়ে গেছে। অথচ মানুষ খাবার পায় না, সব কিছুর দাম অতিরিক্ত। কি খেয়ে থাকবে মানুষ? হাসিনা বলেছিল ঘরে ঘরে চাকরি দেবে, ২০ লাখ টাকা ঘুষ দিলে চাকরি হয়। ঘুষখোর, ভোট চোরকে আর দেখতে চায়না মানুষ। ১৫ বছর ধরে অত্যাচার চালিয়েছে, সর্বনাশ করেছে, অর্থনীতি খেয়েছে। এখন বাংলাদেশ খাওয়ার পায়তারা করছে।
তিনি আরো বলেন, মার্কিন রিপোর্ট বলেছে, এ সরকার মিথ্যা বলে। মানবাধিকার নিয়ে যে রিপোর্ট দেয় তা মিথ্যা। নির্বাচনে জোর করে ক্ষমতায় এসেছে এ সরকার। মানুষ এখন তাদের রুখে দেবে। বন্দুক, পিস্তল, লাঠি, রিভলবার সব ভেঙ্গে চুরমার করে দেবে। একনায়ক হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে মানুষ জেগে উঠবে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গৃহবন্দী আছেন নেত্রী খালেদা জিয়া। তিনি অসুস্থ, তবুও তাকে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হয় নাই। পরিবার, চিকিৎসক বলেছেন তাকে বাইরে পাঠানো দরকার। সে সুযোগও দেওয়া হয় নাই। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দেওয়া হয়েছে। ৬০০’র বেশি মানুষকে গুম করেছে। নির্বিচাটে হত্যা করেছে অনেককে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের পার্টি সিদ্ধান্ত দিলে দলীয় সংসদ সদস্যরা যে কোনো মুহূর্তে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করবেন।” ৭ সংসদ সদস্যের নাম উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “তারা প্রস্তুত আছেন পদত্যাগ করার জন্য।”
দেশে দুর্ভিক্ষ হলে এর দায় শেখ হাসিনা ও তার সরকারকেই নিতে হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এর আগে ১৯৭৪ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলেও দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। মানুষ খাবার খেতে না পেরে রাস্তায় পড়েছিল। এখন আবার সেই অবস্থা ফিরে এসেছে। ১০ কেজি টাকার চাল খাওয়াতে চেয়ে আওয়ামী লীগ এখন ৯০ টাকার চাল খাওয়াচ্ছে। চিনির দামও বেড়েছে। শাকসবজিও মানুষ কিনতে পারছে না। এটা দুর্ভিক্ষের লক্ষণ।
খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি, দূব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি, লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদ ও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ নানা দাবিতে বিএনপি দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে। ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ ও ২২ অক্টোবর খুলনায় সমাবেশ করেছে দলটি। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার রংপুর গণসমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ ও জাহিদুর রহমান জাহিদ প্রমুখ।