রবিবার, ১৩ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রবিবার, ১৩ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রবিবার, ১৩ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই রবিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি

তুলসিতে যখন নতুন জীবন

সানজিয়া শবনম : তুলসী একটি ঔষধী গাছ যার অর্থ- যার তুলনা নেই।কম-বেশি সবাই তুলসী গাছ চিনে এবং জানে কিন্তু তুলসীর ব্যবহার ও উপকারিতা সম্পর্কে আমরা কয় জনেই বা জানি।সাধারনত দুই ধরনের তুলসী দেখা যায় -সাদা তুলসী ও কালো তুলসী। সাদা তুলসীকে হিন্দু শাস্ত্রে ‘রাম তুলসী’ বলা হয়। হিন্দু ধর্মে তাদের নিত্যদিনের জীবনযাত্রায় তুলসীর ব্যাপক ব্যবহার লক্ষনীয়। তুলসীকে হলি বেসিল(holy besil) বলা হয়ে থাকে, এর বৈজ্ঞানিক নাম-Ocimum sanctum.

হিন্দু শাস্ত্রে তুলসীকে সবচেয়ে পবিত্র বলা হয় তাই তারা তুলসী গাছ ঘরের আঙ্গিনায় রাখে।তাদের বিশ্বাস তুলসী গাছ রাখলে রোগ-বালাই কম হয়।
আসুন এবার জেনে নিই প্রতিটা মানুষের জীবনে তুলসী কি কি ভূমিকা রাখতে সক্ষম আর দৈনন্দিন জীবনে এর ব্যবহারবিধি ও উপকারিতা সমূহ।
তুলসীর কাজ:
তুলসী ছত্রাক ও অন্যান্য জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে।যাদের ঠান্ডাজনিত সমস্যা লেগেই থাকে তাদের জন্য তুলসীর চেয়ে উপকারি আর কিছুই হতে পারে না,শুধু তাই নয় তুলসী সৌন্দর্য্য চর্চায় এবং যৌবন ধরে রাখতেও বেশ কার্যকর কিন্তু জ্ঞানহীনতার কারনে আমরা কম-বেশি সবাই একটি ভুল করি আর তা হলো-আমরা তুলসী চিবিয়ে খাই যা একটি মারাত্মক ভুল ছাড়া আর কিছুই নয়।তুলসী সবদিক থেকে উপকারি, কিন্তু চিবিয়ে খাওয়া কখনও উপকারি হতে পারে না। কারন এক গবেষনায় দেখা গিয়েছে তুলসী চিবালে প্রচুর মাত্রায় আয়রন ও মার্কিউরি স্যালাইভা সঙ্গে মিশতে শুরু করে যা দাঁত ও মাঁড়ির জন্য মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে।আর একটি গবেষনায় উঠে আসে -‘তুলসী একমাত্র উদ্ভিদ যা দিন-রাত অক্সিজেন সরবরাহ করে।তুলসীগাছ লাগানোর ফলে সাপ-মশা ও অনান্য কীটপতঙ্গ দূরে থাকে।

ব্যবহারবিধি ও উপকারিতা:

★তুলসী পাতার সুঘ্রান নিলে সর্দি ও নাক বন্ধ থাকা থেকে কিছুটা উপকার পাওয়া যায়।

★তুলসী ও নিম পাতার পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগানো যায় এতে করে ব্রণ,ব্রণের পুরাতন দাগ ও বিভিন্ন মুখের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

★তুলসী পাতার রস বেশ উপকারি- তুলসী পাতা গরম ভাতের উপর ভাপে দিয়ে বা অন্য যেকোন উপায়ে রস বের করে তার সাথে মধু মিশিয়ে খেলে কাশি,কফ্,গলা ব্যথ্যা ইত্যাদি ঠান্ডাজনিত সমস্যা থেকে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

★তুলসী গাছ ও দূর্বা ঘাস একসঙ্গে বেটে লাগালে চর্মরোগে উপকার পাওয়া যায়।নিয়ম করে এর ব্যবহারে চর্মরোগ খুব তাড়াতাড়ি সেরে উঠে।

★কাঁটা ছেড়া শুকানোতে তুলসীর দক্ষতা দেখা যায়।

★তুলসী চা বা গ্রীন টি করেও খাওয়া যায়।প্রতিদিন তুলসীর রস বা চা খেলে উচ্চরক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমে যায় শুধু তাই নয় এটি ডায়াবেটিক রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে যতেষ্ট সাহায্য করে। এটা ও জানা গেছে তুলসী ক্যান্সার দূরে রাখতে সক্ষম।

★মুখের জীবাণু ও গন্ধের সমাধানে – তুলসী ও পুদিনা সিদ্ধ পানি দিয়ে কুলি করা যায় দুই বেলা। এতে করে গন্ধ ও মুখের অন্য সমস্যা ও দূরে থাকে।

★ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করতে তুলসী সিদ্ধ গরম পানিতে টি ট্রি ওয়েল দুই ফোটা ব্যবহার করে স্টিম নিলে খুব ভাল উপকার পাওয়া যায় যা সত্যি অতুলনীয়।

★ রোদের কারনে বা ওয়াক্সের কারনে ত্বকে লালচে ভাব আসলে তুলসী বেটে লাগিয়ে রাখুন ২৫মিনিট।

★আপনার নিত্যদিনের ফেস প্যাকের সাথে তুলসী ব্যবহার করতে পারেন।

★পুরুষত্বহীনতা ও সকল বয়সের প্রস্রাবের সমস্যা দূর করতে তুলসী বেশ উপকারি।
সবার স্লোগান হুউক-“তুলসী রাখুন নিজের কাছে,সুস্থ জীবন ঘরে ঘরে।”
খুব শীঘ্রই তুলসী চা ও তুলসীর বিভিন্ন ফেস প্যাক নিয়ে আবার লিখবো, নিয়ে আসবো নতুন কিছু।আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন সবসময়।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print