Search

বুধবার, ১০ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বুধবার, ১০ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ বুধবার, ১০ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি

আদালতে শিশুর কান্নায় তালাকপ্রাপ্ত দম্পতির ফের বিয়ে

প্রভাতী ডেস্ক : রাজশাহী মহানগর হাকিম আদালতে মামলার শুনানিতে এসে ফের বিয়ে করেছেন তালাক হয়ে যাওয়া স্বামী–স্ত্রী। বৃহস্পতিবার( ৩ ফেব্রুয়ারী) মহানগর হাকিম আদালত–২ এ এই দম্পতির বিয়ে হয় বলে জানান রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ তৌফিক জাহেদী। মহানগর হাকিম মাসুদুজ্জামানের মধ্যস্থতায় এজলাশেই এই বিয়ের আয়োজন করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহানগর হাকিম আদালত–২ এ একটি যৌতুকের মামলায় জামিন শুনানিকালে মায়ের কোলে শিশুর কান্না বিচারক মাসুদুজ্জামানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বাদীর কাঠগড়ায় ৬ মাস বয়সী শিশুটিকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তার ১৮/১৯ বছর বয়সী মা। আসামির কাঠগড়ায় ছিলেন শিশুর ২২/২৩ বছর বয়সী বাবা।

আদালত সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজশাহী মহানগরীর কাটাখালি থানার সমসাদিপুর গ্রামের শরিফুল ইসরামের ছেলে শিমুল পারভেজের সঙ্গে একই গ্রামের স্বপন আলীর মেয়ে জান্নাত ফেরদৌস মিতুর বিয়ে হয় এক বছর আট মাস আগে। এরপর সামান্য ভুল বোঝাবুঝিতে আসামি বাদীনিকে তালাক দেন। ইতোমধ্যে তালাক কার্যকর হয়ে যায়। জামিন শুনানিকালে বাদীনির চোখে পানি এবং আসামিকে মাথা নিচু করে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। বাদী ও আসামির পক্ষে–বিপক্ষে আইনজীবীদের বক্তব্য চলতে থাকলেও আদালতের দৃষ্টি ছিল শিশুটির দিকে। শুনানির এক পর্যায়ে বিচারক মাসুদুজ্জামান জানতে চান শিশুটির ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বাদী এবং আসামি এক হতে চায় কিনা। তখন বাদীনি এবং আসামি কিছু দোষ–ত্রুটি উল্লেখ করেন আদালতের সামনে। আদালত মন দিয়ে তাদের কথা শোনার পর বর্তমান সামাজের প্রেক্ষাপটে কিছু উপদেশ দেন। এক পর্যায়ে বাদী এবং আসামি আদালতের মধ্যস্থতায় নতুনভাবে সংসারে ফিরতে রাজি হন। এরপর দুপুর ১টার পর এই আদালতের এজলাস কক্ষে হাজির হন মেয়ের পক্ষের অভিভাবক, ছেলের পক্ষের অভিভাবক, রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ তৌফিক জাহেদী, বাদী ও আসামির আইনজীবী, বিভিন্ন আদালতের কর্মচারী ও বিচারপ্রার্থীরা। সর্বশেষ হাজির হন রাজশাহী মহানগর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী মো. জহিরুল ইসলাম।

রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ তৌফিক জাহেদী জানান, আদালত কক্ষের ভিতরেই ১ লাখ টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করে ইসলামি শরীয়ত মোতাবেক ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে পড়ানো হয়। বিয়ের পরেই আদালত অঙ্গনে শুরু হয় মিষ্টি বিতরণ। এ সময় উৎসুক জনতা বিবাহিত দম্পতিদের দেখতে আদালতে ভিড় করতে থাকেন। অনেকেই তাদের স্বাগত জানান। বিয়ে শেষে বিচারক মাসুদুজ্জামান বাদীনি ও আসামিকে তার খাস কামরায় ডেকে নিয়ে সংসারের বিভিন্ন বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেন। তাদের শিশুটিকে কোলে নিয়ে আদর করেন।

অ্যাডভোকেট পারভেজ তৌফিক জাহেদী বলেন, প্রতিটি সন্তানেরই স্বাভাবিক জীবনযাপনের অধিকার রয়েছে। আদালতের মানবিকতায় আজ যে বিয়ে অনুষ্ঠিত হলো তা একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print