
মো জিয়াউল হক: বর্তমানে চট্টগ্রামে কুরুচিপূর্ণ প্রেমিক- প্রেমিকাদের অবৈধ মিলনমেলার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে লালদিঘীস্থ হোটেল গোল্ডেন আনসার ইন্টারন্যাশনাল। এই আবাসিক হোটেলে কোন নিয়মনীতি মানা হয়না বলে প্রেমিক-প্রেমিকারা নিষিদ্ধ আকর্ষণের টানে মিলনকেন্দ্রের নিরাপদ স্থান হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানকে বেছে নিচ্ছেন। এই প্রতিষ্ঠানকে অতি সুপরিচিত করতে হোটেলের কয়েকজন স্টাফ ফেসবুকের বিভিন্ন ব্ল্যাক গ্রুপে সার্বক্ষনিক নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাপলদের আকৃষ্ট করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, লালদিঘীর উত্তর পাড়ে এ ওয়াই টাওয়ারের ৫ম তলায় অবস্থিত হোটেল গোল্ডেন আনসার ইন্টারন্যাশনালে এসি/ননএসি মিলে প্রায় ২০-২৫ টি রুম রয়েছে। এসব রুমের স্বাভাবিক ভাড়া ৮০০-২০০০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু কমবয়সী বা ডকুমেন্টসহীন কাপলদের বেলায় এসব রুমের ভাড়া গড়ে ৫০০/- বেড়ে যায়। রুম ভাড়ার সময়কাল সাধারণত ১২-১৮ ঘন্টার জন্য হলেও কাপলদের বেলায় সেটার সময় হয় ২-৩ ঘন্টা, এর চাইতে বাড়তি সময় অবস্থান করতে চাইলে স্টাফদের হাতে দিতে হয় অতিরিক্ত ৩০০-৪০০ টাকার বকশিস। কাপলদের জন্য রেজিস্ট্রার এন্ট্রি করতে কোন ডকুমেন্টস নেওয়া হয় না। হোটেলের স্টাফরা কম্পিউটার থেকে কিছু জাল আইডি- জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে রাখে, সেগুলো ব্যবহার করে অতি প্রয়োজনে।
ফেসবুকের কয়েকটি ব্ল্যাক গ্রুপের আশীর্বাদে এই আবাসিক হোটেল কাপলদের কাছে নিষিদ্ধ সম্পর্কের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত হয়েছে। “Dark restaurant in Chittagong”সহ কয়েকটি ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপে হোটেল স্টাফ বেলাল -রায়হানসহ কয়েকজন মিলে এই হোটেল কাপলদের জন্য খুবই নিরাপদ, প্রশাসনের ঝামেলা নেই মর্মে পোস্ট দেয়। বেলাল-রায়হান নিষিদ্ধ সম্পর্কে জড়িত কাপলদের কাছে খুবই সুপরিচিত। তাদের পোস্টে অনেকে রিভিউ দিয়ে কমেন্ট করেন। কেউ বলে খুবই নিরাপদ পরিবেশ, আবার কেউ বলে স্টাফদের নজর খারাপ। এভাবেই এই প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানের এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ম্যানেজার আজিজ বলেন আমি এসব ফেসবুকের মাধ্যমে কাপল সংগ্রহের ব্যাপারে জানি না। বেলাল এসব ভালো জানবে। এসময় ডেস্কটপে ব্যস্ত বেলাল উঠে এসে একটু চা পানের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, নিয়মিত বর্ডার খুবই কম। নিয়মিত বর্ডার দিয়ে বাড়ী ভাড়া পরিশোধ করাও সম্ভব না। তাই কিছু কাপল সংগ্রহ করতে হয়। প্রশাসনের নজরদারি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের মালিক ইস্পাহানি গ্রুপের কর্মকর্তা আহমেদ সাহেব খুবই প্রভাবশালী লোক। তিনিই সব ম্যানেজ করেন।
ইস্পাহানি গ্রুপে হোটেল মালিক আহমেদ সাহেবের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঐ নামে সেখানে কোন কর্মকর্তা নেই। তিনি সেখানে একজন পণ্য সাপ্লাইয়ার।
এই ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ জাহিদুল কবির জানান, আবাসিক হোটেলে ফ্যামিলি রুম ভাড়া দিলে অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করতে হবে। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এভাবে কাপল সংগ্রহ করার কোন সুযোগ নেই। এই বিষয়ে তদন্ত পূর্বক দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
★আগামী পর্বে প্রকাশিত হবে হোটেল গোল্ডেন আনসারের প্রতারণার ফাঁদ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন★