সোমবার, ১৪ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সোমবার, ১৪ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ সোমবার, ১৪ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ই মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

হোমিও চিকিৎসক হলেও তিনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, প্রেসক্রাইব করেন এলোপ্যাথিক ঔষধ- করেন ডিভাইস খৎনাও!

বিশেষ প্রতিনিধি : হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাকে সাধারণত প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে ধরা হলেও বর্তমানে কতিপয় অখ্যাত, দূর্নীতিবাজ ও অসাধু হোমিও চিকিৎসক খৎনা থেকে শুরু করে ছোট খাটো সার্জারী পর্যন্ত করে যাচ্ছেন নির্দ্বিধায়। এসব অনভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসকের কারণে সাধারণ রোগীরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এসব কথিত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জনের অভিযান অব্যাহত থাকলেও লঘুদণ্ড দেওয়া হয় বলে তারা পুনরায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করার সাহস পায়।

এমনই একজন কথিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সন্ধান পাওয়া গেছে চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানাধীন মিয়াখান রোডের ইসহাকের পুলের পূর্ব পাশে। তিনি হলেন জান্নাত হোমিও রিচার্স সেন্টারের স্বত্বাধিকারী ডা.এস এম আহমদুর রহমান টিপু (ডিএইচএমএস,বিএইচবি)। তার সাইনবোর্ডে লিখা রয়েছে নাকের পলিপাস, পাইলস, অর্শ্ব, গেজ, ফিস্টুলা ইত্যাদি রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। কি আরেকটি সাইনবোর্ডে বড় করে লিখা রয়েছে ডিভাইস খৎনা করা হয় মাত্র ২৫০০ টাকায়।

জানা যায়, কিছুদিন পূর্বে তিনি তামীম ইকবাল নামের ১২ বছর বয়সী এক কিশোরকে ডিভাইস খৎনা করতে গিয়ে তার অনেক ক্ষতি করেন। ফিনিশিং তো দূরের কথা উল্টো ইনফেকশন হয়ে তামিম ২ মাস কষ্ট পেয়েছে। খৎনা সফল না হওয়ায় তাকে পুনরায় খৎনা করার পরামর্শ দিয়েছেন অন্য একজন সার্জন। এছাড়া তার নাকে পলিপাস থাকায় সেটার চিকিৎসার দায়িত্বও নেন এই কথিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। যদিও পলিপাসের চিকিৎসার জন্য এলোপ্যাথিকের আশ্রয় নেন। যেটার প্রেসক্রিপশন প্রতিবেদকের নিকট সংরক্ষিত। এভাবে অর্থের লোভে প্রতিনিয়ত এই চিকিৎসক অনেক রোগীর অপূরণীয়
ক্ষতি সাধন করে যাচ্ছে। এসব ক্ষতির কথা রোগীদের সম্পূর্ণ অজানা।

এসব ব্যপারে জানতে চাইলে ডা.এস এম আহমদুর রহমান টিপু বলেন, আমি দীর্ঘ ২০-২৫ বছর যাবত চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসতেছি। আমার অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। হোমিওপ্যাথিক বিষয়ে পড়াশোনা করে এলোপ্যাথিক চিকিৎসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি এলোপ্যাথিক বই পড়ি, অভিজ্ঞতা থাকলে সকল প্রকার চিকিৎসা সেবা প্রদান করা যায়। খৎনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি, হোমিওপ্যাথিকে সার্জারির প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে তাই খৎনা করা আমার জন্য বেআইনী নয়। ভুক্তভোগী তামিমের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিভাইস খৎনা সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা নেই। মাত্র ২ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে এই খৎনা করানোর কারণে সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাই এখন আর ডিভাইস খৎনা করাই না, শুধু এনালগ খৎনা করাই।

এসব অনভিজ্ঞ কথিত চিকিৎসক কর্তৃক খৎনার বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, এম.বি.বি.এস ডাক্তার ছাড়া এসব অনভিজ্ঞ লোকজন কর্তৃক খৎনা করার কোন সুযোগ নেই। কেউ করালে সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যারা এভাবে ঢালাওভাবে খৎনা করাচ্ছেন তাদের তথ্য প্রেরন করারও অনুরোধ জানান তিনি।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print