
প্রভাতী ডেস্ক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা না হলে ফয়সালা হবে রাজপথে। ময়মনসিংহ বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ২টায় পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ সফল করতে ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, জামালপুর, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ জেলার নেতাকর্মীরা অংশ নেন। বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয় সমাবেশস্থল।
বিএনপির মহাসচিব হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে। অন্যথায় বিষয়টি রাজপথেই ফয়সালা হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি, জ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং পুলিশ ও দুর্বৃত্তের গুলিতে বিএনপি কর্মীদের মৃত্যু, হামলা ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই- দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। দেশনায়ক তারেক রহমানের ওপর থেকে সব মামলা প্রত্যাহার করে তাকে দেশে আসার সুযোগ দিতে হবে।’ এ সময় তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর থেকে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং কারাগারে থাকা নেতাকর্মীদের মুক্তি দেয়ারও দাবি তোলেন।
তিনি আরো বলেন , ‘দেশে গণতন্ত্র নেই বলেই সরকার ও শেখ হাসিনার সমালোচনা করা যায় না। জনগণের মুখ বন্ধ করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে। শেখ হাসিনা গড-নাকি ঈশ্বর? কেন তার সমালোচনা করা যাবে না? যারা শেখ হাসিনাকে ঈশ্বর ও বিধাতা মনে করে তাদের সে ধারণা ভেঙে দিয়ে মানুষের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। নয় তো ফয়সালা হবে রাজপথে।’ ময়মনসিংহে পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।
এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে নগরীতে ছয় শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। জিরো পয়েন্ট, সিজিএম কোর্ট এলাকা, শম্ভুগঞ্জ ব্রিজ মোড়, চরপাড়া মোড়সহ নগরীর প্রবেশ মুখগুলোতে সতর্ক অবস্থানে থাকে পুলিশ। বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই বিকেল সাড়ে পাঁচটায় সমাবেশ সমাপ্ত হয়েছে।
এ দিকে ময়মনসিংহের বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগযোগ অঘোষিতভাবে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এমতাবস্থায় বিএনপি নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হয়েছেন পায়ে হেঁটেই। অনেকে গতকাল থেকেই সমাবেশস্থলের আশপাশের এলাকায় গিয়ে অবস্থান করছেন। এই সমাবেশ করতে বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হেঁটে সমাবেশস্থলে আসতে দেখা যায়। অনেকে শুক্রবার থেকেই ময়মনসিংহ শহরের আশপাশে হোটেলে অবস্থান করছেন। সমাবেশের আগে অভ্যন্তরীণ রুটসহ ময়মনসিংহ থেকে আন্তজেলা রুটে বাস চলাচল করছে না। এতে সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক ও শম্ভুগঞ্জ মোড় এলাকায় ময়মনসিংহের অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলেনি । নগরের পাটগুদাম আন্তজেলা বাস টার্মিনালেও কিশোরগঞ্জ, শেরপুর ও নেত্রকোনাগামী কোনো বাস ছাড়তে দেখা যায়নি। ওই তিন জেলা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকাগামী যেসব বাস চলাচল করে, সেগুলোও চলেনি গতকাল শনিবার।