Search

রবিবার, ৯ই নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রবিবার, ৯ই নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রবিবার, ৯ই নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ই জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি

মামলায় ৭ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় আরো ১৫-১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে

চট্টগ্রামে সরোয়ার বাবলা হত্যায় মামলা, গ্রেফতার ২

গণসংযোগের আগে পুলিশকে কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে জানানোর পরামর্শ সিএমপি কমিশনারের

চট্টগ্রামে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর জনসংযোগে গুলি করে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলাকে হত্যার ঘটনায় নগরের বায়েজীদ থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় এক যুবদল নেতাসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে সরোয়ারের বাবা আবদুল কাদের নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানায় মামলাটি করেছেন। মামলায় বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী ওরফে বড় সাজ্জাদ এবং তার বাহিনীর কিলিং স্কোয়াডের প্রধান হিসেবে পরিচিত রায়হান আলমসহ ৭জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

অন্য আসামিরা হলেন- বোরহান উদ্দিন, নেজাম উদ্দিন, আলাউদ্দিন, মোবারক হোসেন ওরফে ইমন ও হেলাল ওরফে মাছ হেলাল।

বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, মামলায় ৭ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় আরো ১৫-১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। আলাউদ্দিন ও হেলালকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। এদের মধ্যে আলাউদ্দিন নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সহ-সভাপতি ও হেলাল যুবদলকর্মী বলে জানা গেছে।

মামলার এজাহারে সরোয়ারের বাবা অভিযোগ করেছেন, বিদেশে পলাতক সাজ্জাদ আলী দীর্ঘদিন ধরে সরোয়ার হোসেন বাবলাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন। সর্বশেষ গত রোববার (২ নভেম্বর) সরোয়ারকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বলেন, ‘সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’।

গত বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়া সরোয়ারকে সরাসরি পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। সাজ্জাদের নির্দেশে তার অনুসারীরা পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে র‌্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শুক্রবার সকালে নগরীর চান্দগাঁও থানার হাজীরপুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে আলাউদ্দিন ও হেলালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বাসা ওই এলাকায়। উভয়ে বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী ওরফে বড় সাজ্জাদের বাহিনীর সদস্য বলে জানান র‌্যাব।

সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘দুষ্কৃতিকারীদের টার্গেট ছিলো সরোয়ার বাবলা। সরোয়ার বাবলার মৃত্যু নিশ্চিত করতে গুলি করে। ঘটনার সময় তিনি এরশাদ উল্লাহর সঙ্গেই ছিলেন। সরোয়ারের অপরাধের ইতিহাস আছে। ধারণা করা হচ্ছে, হামলার মূল টার্গেট ছিলেন সরোয়ার। ঘটনার মূল যারা, তাদের অনেকেই জেলে আছেন এবং দেশের বাইরে থেকে এর ইন্ধন আছে,’ বলেন সিএমপি কমিশনার।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অপরাধ যেখানে হচ্ছে আমরা অধিকাংশদেরই গ্রেপ্তার করছি। কিন্তু আসামিরা ঘটনার পরপর রিমোট এলাকায় চলে যায়। সেখান থেকে তাদের ধরা খুবই দুষ্কর।’

নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, ‘এটা অবশ্যই ভালো হয়নি। নির্বাচনের আগ মুহূর্তে এমন ঘটনা ভালো নয়। এমন যেন আর না ঘটে, সেই বিষয়ে আমরা সচেতন থাকব’

‘এই ঘটনার আগে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এরশাদ উল্লাহ আমার অফিসে এসেছিলেন। এরপরে তিনি বের হয়ে যান। তিনি যে গণসংযোগে যাবেন, পুলিশকে জানাননি। লোকাল থানাও ইনফর্মড ছিল না,’ যোগ করেন তিনি। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের গণসংযোগের আগে স্থানীয় থানা ও সিএমপিকে কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে জানানোর পরামর্শ দেন তিনি।

উল্লেখ্য, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর সঙ্গে সরোয়ার হোসেনের বিরোধ রয়েছে। এর আগে গত ৩০ মার্চ নগরের বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকায় সরোয়ারকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। সেদিন ঘটনাস্থলে দুজন মারা যান। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান সারোয়ার।গুলিতে আহত ইরফানুল হকের খালাতো ভাই স্থানীয় ৩ নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রশিদ ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘মাগরিবের নামাজের পর মসজিদের পাশে দোকানে জনসংযোগ চালানোর জন্য এরশাদ উল্লাহসহ আমরা নেতা–কর্মীরা যাই। হঠাৎ মাস্ক পরা কয়েকজন যুবক পেছন থেকে এসে আমাদের সরিয়ে দিয়ে সরোয়ারের ঘাড়ে–গলায় গুলি করে। গুলির শব্দ পেয়ে নেতা–কর্মীরা সবাই এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। পরে দেখি মাটিতে পড়ে আছেন সরোয়ার। মৃত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print