
চট্টগ্রামকে ক্লিন, গ্রিন, হেলদি ও সেফ সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে চলমান উদ্যোগ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্তিতে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) কাজীর দেউড়ির ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (আইসিসি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, নগরের দীর্ঘদিনের সংকট—বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জলাবদ্ধতা, যোগাযোগব্যবস্থা, কিশোর গ্যাংসহ নানা সমস্যার সমাধানে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সামনে এসব উদ্যোগ আরও বিস্তৃত করা হবে।
অনুষ্ঠানে মেয়র জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর আগ্রাবাদ এলাকায় ১৭ বছর ধরে বেদখলে থাকা জমি উদ্ধার করে সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। নগরের ৫০টি বড় সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা সম্পন্ন হলে পুরো শহরের চেহারা বদলে যাবে। ডিসেম্বরেই নাগরিক সেবা সহজ করতে চালু হবে ‘আমাদের চট্টগ্রাম’ অ্যাপ, যেখানে ময়লা অপসারণ, নালা পরিষ্কার, রাস্তা সংস্কার, আলোকায়ন, মশা, নিরাপত্তা—সব অভিযোগ ছবি সহ জানানো যাবে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে মেয়র বলেন, শহরে প্রতিদিন ৩০০০–৩১০০ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ২২০০ টন সংগ্রহ করা সম্ভব হলেও বাকি অংশ নালা–খালে গিয়ে শহর দূষিত করে। এ কারণে ডোর–টু–ডোর বর্জ্য সংগ্রহ প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এতে এ মাসে আগের তুলনায় ৫০০ টন বেশি বর্জ্য সংগ্রহ সম্ভব হয়েছে। তিনি জানান, হালিশহরে কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদনের কার্যক্ষমতা যাচাই চলছে। কয়েক মাস পর বাসাবাড়ির ময়লা বিনা মূল্যে সংগ্রহ করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
মেয়রের দাবি, গত ৩০ বছরের জলাবদ্ধতা এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। দীর্ঘ বর্ষায়ও আগের মতো জলাবদ্ধতা দেখা যায়নি। কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক উদ্যোগ হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাউন্সেলিং কার্যক্রম চালু করা হবে।
স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন নিয়ে তিনি বলেন, ব্রেস্ট ও লিভার ক্যান্সার বিষয়ে সচেতনতা, টাইফয়েড ভ্যাকসিন, সিটি কর্পোরেশনের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ এবং সাশ্রয়ী ডায়ালাইসিস সেবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো স্কুল হেলথ কার্ড কর্মসূচিও শুরু হয়েছে।
রাজস্ব আহরণে স্বচ্ছতা আনতে অতীতের অতিরিক্ত নির্ধারিত রাজস্ব পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। কমার্শিয়াল হোল্ডিং ট্যাক্স ফাঁকি রোধে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালুর প্রস্তুতি চলছে। অনুষ্ঠানে এআই–ভিত্তিক হেলথ কেয়ার সিস্টেম উদ্বোধন করা হয়, যেখানে নাগরিকদের স্বাস্থ্য তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ করা যাবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ, ডিআইজি আহসান হাবীব পলাশ, সিডিএ চেয়ারম্যান নুরুল করিম এবং অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পরিষদ প্রশাসক মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী। তারা চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও নগরব্যবস্থাপনা নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ ও প্রত্যাশা তুলে ধরেন।









