
নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম নগরীর শাহ আমানত সেতু-চাক্তাই-ফিশারীঘাট এলাকার টোকাই পিচ্ছি সাজ্জাদ ওরফে শামীম (১৮) প্রশাসনের নজর এড়িয়ে এখনো আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দিনের বেলায় সে ফিশারীঘাটের শ্রমিক হিসেবে কাজ করলেও সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় তার অপকর্ম। ইয়াবা-গাঁজা বিক্রি, চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপকর্মে জড়িত সাজ্জাদ। সে নিজেও মাদকসেবি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, টোকাই পিচ্ছি সাজ্জাদের গ্রামের বাড়ী পটিয়া। তার বাবা রশিদ শুটকী পট্টিতে শ্রমিকের কাজ করে। সে বর্তমানে ভেড়া মার্কেটস্থ ফরিদের কলোনীতে বসবাস করে। সাজ্জাদ তার আসল নাম গোপন করে নিজেকে শামীম নামে পরিচয় দেয়। দিনের বেলায় ফিশারীঘাটের শ্রমিক হিসেবে কাজ করলেও সন্ধ্যার পর সে ইয়াবা-গাঁজা বিক্রি ও চুরি-ছিনতাই করে। ছোটবেলা থেকে সে ভেড়া মার্কেটের বস্তিতে বসবাস করে আসার সুবাদে এই এলাকার অলি গলি এবং লোকজন সম্পর্কে তার খুব ভালো ধারণা রয়েছে। তার সমবয়সী টোকাইদের নিয়ে সে গড়ে তুলেছেন ১৫-২০ জনের একটি গ্রুপ। গ্রুপের সব সদস্যই ইয়াবা-গাঁজা বিক্রি এবং চুরি -ছিনতাইয়ের সাথে সম্পৃক্ত।
সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চাক্তাই-ভেড়া মার্কেট এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে ইয়াবা ও গাঁজা। ফাঁকে ফাঁকে করে চুরি-ছিনতাই।
রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকদের মোবাইল ছিনতাই করা খুব সহজ হলেও সিএনজি অটোরিকশা থেকে ছিনতাইয়ের সময় তারা অবিনব কৌশল অবলম্বন করে। মেরিন ড্রাইভ রোড, শাহ আমানত সেতুর মোড় এবং চাক্তাই রোডে দলের সদস্যরা ঘুরাঘুরি করে। যাত্রীর অবস্থা বুঝে কৌশলে সিএনজির পেছনের বাম্পারে লাফ দিয়ে ওঠে বসে যায়। তারপর ধারালো চাকু দিয়ে সিএনজির হুড কেটে যাত্রীর মোবাইল এবং হাত ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে মূহুর্তের মধ্যে নেমে যায়। এসব করতে সব মিলিয়ে তাদের সময় লাগে এক থেকে দেড় মিনিট। সিএনজি থেকে এই কৌশলে ছিনতাইয়ের সময় তারা মূলত মহিলা যাত্রীকেই বেশী টার্গেট করে।
সিএনজির মত দোকান চুরি, বাসা-বাড়ী চুরি এবং ট্রাকের মালামাল চুরিতেও অবিনব কৌশল অবলম্বন করে এই গ্রুপের সদস্যরা। এছাড়া রাস্তায় হেঁটে যাওয়া একা কোন মহিলার গলায় স্বর্ণের চেইন থাকলে সেটা চোখের পলকেই ছিনিয়ে নেয় সাজ্জাদ।
রাস্তার মোড়ে চলমান পথিক বা অপেক্ষায় থাকা কোন লোকের মোবাইল-ব্যাগ সহজে ছিনতাই করতে না পারলে তারা কয়েকজন মিলে ঐ লোকের সাথে ইচ্ছে করে ধাক্কা লাগিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি করে টাকা-মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। পরে ছুরি বের করে নিঃস্ব ব্যক্তিকে ভয় দেখিয়ে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান এই টোকাই সাজ্জাদ এলাকায় খুবই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। উশৃংখল আচরণের জন্য তাকে কেউ বাধা নিষেধ করে না। তার কারণে এলাকার বদনাম হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এই টোকাই সাজ্জাদ হবে এক সময়ের ভয়ংকর সন্ত্রাসীর নাম।
এই টোকাই সাজ্জাদের ব্যাপারে জানতে চাইলে বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, এই নামের ইয়াবা ব্যবসায়ী/ছিনতাইকারী সম্পর্কে তিনি অবগত নয়, খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হতে পারলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।