Search

রবিবার, ২০শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রবিবার, ২০শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রবিবার, ২০শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪শে মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

বাস্তুহারা-ক্ষেতচরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা চলমান রাখতে আবারো সভাপতি হতে চান তালুকদার

মো: শামসুল আলম তালুকদার

বিশেষ প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানাধীন বাস্তুহারা বহুমুখী সমবায় সমিতি লি:(রেজি: ৭৯২৪) এর ৫ম ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন আগামী ১৭ই ফেব্রুয়ারী বুধবার (সকাল ৮টা-বিকাল ৫টা পর্যন্ত) অনুষ্ঠিত হবে। সমিতির সদস্য অর্থাৎ ভোটার সংখ্যা ১২২৫ জন। গরীব- অসহায় মানুষের কল্যাণে এবং বাস্তুহারা- ক্ষেতচরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা চলমান রাখতে আবারো সভাপতি হতে চান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সমাজসেবক ও বর্তমান সভাপতি জনাব মো: শামসুল আলম তালুকদার।

সরেজমিনে বাস্তুহারা-ক্ষেতচর এলাকা ঘুরে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, শামসুল আলম তালুকদার সভাপতি থাকাকালীন এলাকার যেই উন্নয়ন হয়েছে সেটা আগে কখনোই হয়নি। তিনি সভাপতি থাকাকালীন এলাকায় কোন ধরণের চাঁদাবাজি, প্লট নিয়ে দূর্নীতি, ছিনতাই হয়নি। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধেও তিনি কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। তার এসব আদর্শ নীতি প্রসঙ্গে এলাকাবাসী বলেন, তালুকদার সাহেব দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। বর্তমানে তিনি একজন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক, উনার একটি ৫ তলা বাড়ী রয়েছে। তাই অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল ও নীতিবান হওয়ায় তার মধ্যে কোন প্রকার লোভ-লালসা নেই। তিনি বাস্তুহারায় এসেছেন শুধু গরীব, অসহায়, মেহনতী মানুষের সেবা করতে। একারণে বাস্তুহারাবাসীর ভাগ্য পরিবর্তন করতে তালুকদার সাহেবের মত লোকের নেতৃত্ব খুবই প্রয়োজন। তাই গত নির্বাচনে আমাদের অনেক অনুরোধে তিনি সভাপতি প্রার্থী হয়েছিলেন। তাকে বাস্তুহারার সদস্যরা মন খুলে ভোট দিয়েছেন, বিজয়ী হয়ে ৮০ ভাগ প্রতিশ্রুতি তিনি রেখেছেন। আমাদের সুখে-দুঃখে উনাকে সবসময় পাশে পেয়েছি। তাই এবারও সভাপতি পদে তালুকদার সাহেবের কোন বিকল্প নেই।

★★★তালুকদার সভাপতি থাকাকালীন উন্নয়ন :

গত নির্বাচনে তালুকদার সভাপতি হওয়ার পর এলাকার যেসব উন্নয়ন হয়েছে সেগুলো হল-
★সিটি কর্পোরেশন, এনজিওসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতায় বাস্তুহারা -ক্ষেতচরের বিভিন্ন রাস্তা, ড্রেন এবং গলির কাজ সম্পন্ন করা।

★৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাস্তুহারা বহুমুখী সমবায় সমিতির দ্বিতল অফিস নির্মাণ করা।

★দখলদারদের নিকট থেকে সমিতির নামে দোকান উদ্ধার ও নতুন দোকান নির্মাণ করা। সব মিলে ১৫টি দোকান- যেসবের মূল্য প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা।

★বাস্তুহারা -ক্ষেতচরের মানুষের পানির কষ্ট দূর করতে মাননীয় মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল) এবং এনজিও এর সহযোগিতায় গভীর নলকূপের ব্যবস্থা করা।

★সিডিএ এর সহযোগিতায় ক্ষেতচর জামে মসজিদের পুন: নির্মাণ কাজ শুরু করা।

★মাননীয় মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল) এর সহযোগিতায় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সৌর বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা করা।

★সমিতির নামে ব্যাংক হিসাব খোলা।

★করোনাকালে নিজ তহবিল এবং বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে সমাজসেবকদের নিকট থেকে অর্থ সংগ্রহ করে এলাকাবাসীর জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করা।

★ গরীব ও অসহায়দের চিকিৎসায় এবং গরীবের মেয়েদের বিবাহে নিজ তহবিলের অর্থ ব্যয় করা।

★★★এবারের প্রতিশ্রুতি :

শামসুল আলম তালুকদারের এবারের নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিগুলো হলো-
★বাস্তুহারা এলাকায় কোন ডেলিভারি সেন্টার না থাকায় গর্ভবতী মহিলাদেরকে দূর-দূরান্তে গিয়ে ডেলিভারি করাতে হয়। তাই তাদের এই সীমাহীন কষ্ট লাগবে এলাকায় একটি ডেলিভারি সেন্টার করা।

★বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাকা ভবন করা এবং দশম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নত করা।

★প্রতিটি ঘরে বৈধ বিদ্যুৎ ও মিটারের ব্যবস্থা করা।

★ সমিতির গঠনতন্ত্র পরিবর্তন ও উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা।

★সকল আর্থিক লেনদেন ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে করা।

★ ক্ষেতচর কলোনির গলির ভেতরে নাইট গার্ডের ব্যবস্থা করা।

★সিটি কর্পোরেশন এবং সমিতির মাধ্যমে পর্যাপ্ত ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা।

★এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যু, ইভটিজার এবং চাঁদাবাজ নির্মূল করা।

★রাস্তার উন্নয়ন কাজের জন্য যেসব সদস্যদের ঘর-বাড়ীর জায়গা একোয়ার করা হবে তাদেরকে ক্ষতিপূরণ হাতে হাতে পৌঁছানো হবে এবং পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

★সাবেক সভাপতি(ভারপ্রাপ্ত) উত্তম কুমার সুশীল কর্তৃক সমিতির আত্মসাৎকৃত অর্থ উদ্ধারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

মো: শামসুল আলম তালুকদার বলেন, আমি দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলাম। বর্তমানে আমার ১ছেলেও প্রবাসী, অপর ছেলে চাক্তাইয়ে ব্যবসা করে। রাজাখালী রোডে আমার একটি বাড়ী রয়েছে। সুন্দরভাবে চলার মত তৌফিক আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন। সমিতি থেকে আমার নিজের জন্য ১টাকাও নিতে হয় না,বরং নিজের পকেট থেকে দিচ্ছি। ২০১৭ সালে সাবেক সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) উত্তম কুমার সুশীল আমাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার সময় আয়-ব্যয়ের কোন প্রকার হিসাব দেন নি। আমাদের হিসাব মতে প্রায় ২২ লক্ষ টাকার উপরে তিনি আত্মসাৎ করেছেন। অপরদিকে আমি দায়িত্ব পালনের এই ৩ বছরে সমিতির নিকট থেকে ৩,৫৯,৯৭৮ টাকা পাওনা রয়েছি। গরীব অসহায়দের জন্য নিজ তহবিল থেকে অর্থ ব্যয় করেছি। সবমিলে এলাকাবাসীর জন্য কি করেছি সেটা এলাকাবাসী বলবে, আমি বলবো না। এছাড়া এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে আমি সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছি। সুতরাং সমিতির সদস্যদের প্রতি আমার অনুরোধ আপনাদের অধিকার আদায়ের জন্য, গরীব অসহায় মানুষের কল্যাণ সাধন এবং বাস্তুহারা- ক্ষেতচরের উন্নয়নে আমাকে সভাপতি পদে চেয়ার মার্কায় আপনাদের মূল্যবান রায় প্রদান করবেন। মনে রাখবেন দায়িত্ব যদি পুনরায় লুটপাটকারীদের হাতে চলে যায় তাহলে এলাকার উন্নয়ন তো দূরের কথা এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যুদের রাজত্ব কায়েম হবে।

সমিতির সদস্য জাকির আহমেদ বলেন, আমরা সুখে শান্তিতে ও নিরাপদে বসবাস করতে, দখল-বেদখল, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ করতে বর্তমান সভাপতি জনাব শামসুল আলম তালুকদারকে আবারো সভাপতি নির্বাচিত করতে চাই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমিতির একজন সদস্য বলেন, এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদপ্রার্থী উত্তম কুমার সুশীল সাবেক সভাপতি ও ভূমিদস্যু জসীমের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী। জসীমের সাথে প্রতিনিয়ত তার যোগাযোগ রয়েছে। প্রশাসন এবং এলাকাবাসী জসীমকে বিতাড়িত করার পরে উত্তমকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার পর তিনি লুটপাট করে খেয়েছেন। খাসজমি দখল করে গড়ে তুলেছেন ৩টি বিশাল কলোনি এবং ৩টি দোকান। ১টি দোকানে নিজে ঔষধের ফার্মেসী করেন এবং ২টি দোকান ভাড়া দিয়েছেন। এসব খাত থেকে তার মাসিক আয় লক্ষাধিক টাকা। সমিতির প্লট- দোকান বিক্রি এবং সদস্যদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় বাবদ ২২ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যিনি একবার দায়িত্ব পালন করে এরকম দূর্নীতি করেছেন তিনি আবার দায়িত্ব পেলে কি করবেন সেটা সদস্যদের মাথায় রাখা উচিৎ। এছাড়া অপর সভাপতি পদপ্রার্থী আব্দুর রশিদ ড্রাইভার ৪ বার নির্বাচন করে ৪ বারই হেরেছেন। এরপরেও কেন তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হন সেটা তিনি ভালো জানেন। সবমিলিয়ে তালুকদার সাহেব সবার পছন্দের, তাই অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনা না ঘটলে তিনি আবারো সভাপতি হবেন।

সাবেক সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ও সহ-সভাপতি পদপ্রার্থী মো: মফিজুর রহমান উড়োজাহাজ মার্কায় ভোট প্রার্থনা করে বলেন, সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে এলাকাবাসীর জন্য কি করেছি সেটা এলাকাবাসী বিবেচনা করবে। আমরা সরকারি খাস জায়গায় বসবাস করতেছি, আমরা চাই আমাদের এই বসবাস স্থায়ী হউক। স্থায়ী বসবাসের জন্য সবার ঐক্যবদ্ধ শক্তির বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বাস্তুহারা এলাকায় আমাদের মধ্যে অনৈক্য থাকায় এবং ভূমিদস্যুদের দালাল শ্রেণির উদ্ভব হওয়ার কারণে সমিতির তথা এলাকার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। তাই সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে এবং দালাল শ্রেণি বিলুপ্ত হলে দৃশ্যমান উন্নতি সম্ভব। তিনি এবার সহ-সভাপতি নির্বাচিত হলে দালাল শ্রেণির নির্মূলে কাজ করবেন বলেও জানান।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print