
নিজস্ব প্রতিবেদক : জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং “বিকাশ” নিয়ে প্রতারক চক্র এতোদিন সাধারণ মানুষের অর্থ হাতিয়ে নিলেও বর্তমানে এজেন্টদেরকেও ছাড় দিচ্ছে না। বিকাশ কতৃপক্ষ প্রতিনিয়ত সতর্ক করার পরেও অনেক এজেন্ট ভুল করে প্রতারক চক্রের পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। প্রতারকরা বিভিন্ন কৌশলে ফাঁদে পেলে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা কোম্পানির কর্মকর্তা পরচিয় দিয়ে বিভিন্ন লোভনীয় অফার দিয়ে কথা বলতে বলতে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে টাকা নিয়ে যায়। এসব প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে প্রশাসন সজাগ থাকলেও তারা দূর-দূরান্তের হওয়ায় তাদেরকে শনাক্ত করা কিছুটা কষ্টসাধ্য।
কিন্তু চট্টগ্রামের চকবাজার আতুরার দোকান মোড়স্থ মো: মনির নামের এক এজেন্টের ৫০ হাজার টাকা অন্য কৌশলে হাতিয়ে নিলো ইউনিয়ন ব্যাংক কর্মকর্তা মো: জামাল উদ্দীন।
জানা যায়, জামাল উদ্দীন মনিরের দোকানের পার্শ্বে ছৈয়দ শাহ রোডের নাজমা টাওয়ারে থাকেন। তার স্ত্রী একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ী মনিরের কাছ থেকে নিয়মিত মোবাইলে রিচার্জ করার মাধ্যমে জামালের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে। মাঝে মাঝে কিছু অলস সময় মনিরের দোকানে বসে কাটাতেন তিনি। সেই সুবাদে গ্রাহকদের সাথে লেনদেনের সময় মনিরের বিকাশ এজেন্ট’র পিন কোড জেনে যায় প্রতারক জামাল।
পিন কোড জানার পর ২০১৯ সালের ৩০শে ডিসেম্বর বড় ধরণের প্রতারণা করেন জামাল। তিনি ১ হাজার টাকা পাঠানোর জন্য নম্বর উঠিয়ে দিবে বলে মনিরকে তার বিকাশ মোবাইলটি দিতে বলেন। মনির সরল বিশ্বাসে তার হাতে এজেন্ট সিমের মোবাইলটি তুলে দেন। এই সুযোগে জামাল ২টি নম্বরে ২৫ হাজার টাকা করে ৫০ হাজার টাকা পাঠিয়ে মেসেজ মুছে দেন। নম্বর দিতে দেরী হওয়ায় মনিরের সন্দেহ হয়। তিনি জামালের হাত থেকে মোবাইল নিয়ে চেক করে দেখেন ৫০ হাজার টাকা নেই।
মনির হতবাক ও নিরুপায় হয়ে জামালকে দোকানে বসতে বলে পাশের কয়েকজন দোকানদারকে ডেকে এনে ৫০ হাজার টাকা কোথায় নিছে জিজ্ঞেস করলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করেন তিনি টাকাগুলো কক্সবাজারের একজন পাওনাদারকে পাঠিয়েছেন। কয়েকজন দোকানদারের সামনে তিনি টাকাগুলো ২ কিস্তিতে ফেরত প্রদান করার প্রতিজ্ঞা করেন। টাকার গ্যারান্টিসরূপ তার নিকট চেক চাইলে তিনি বলেন তার কাছে সব চেক শেষ হয়ে গেছে বাহকের নাম বসানো হয়নি কিন্তু ২২ হাজার টাকা বসানো হয়েছে ইউনিয়ন ব্যাংকের এমন একটি চেক আছে। তখন মনির ওটা দিতে বলেন এবং একটা ৫০ টাকার স্ট্যাম্পও হয় টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে। কিন্তু ২ দিন পর টাকা প্রদানের কথা থাকলেও বর্তমানে ৬ মাস পরেও টাকা ফেরত দেননি প্রতারক জামাল। তিনি বর্তমানে ইউনিয়ন ব্যাংক উখিয়া শাখায় কর্মরত আছেন, বাসায় আসলেও তিনি লুকিয়ে চলে যান। তাকে বাসায় পাওয়া যায় না।
এই ব্যাপারে ব্যবসায়ী মনির বলেন, জামাল আমার সাথে যেই প্রতারণা করেছিলো সেটা ক্ষমার অযোগ্য। কিন্তু তিনি একজন সম্মানি মানুষ তাই তাকে সুযোগ দিয়েছিলাম। এখন তিনি আবারো আমার সাথে প্রতারণা করতেছেন। করোনা মহামারীর কারণে এখন আদালতে মামলা করার সুযোগ পাইনি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আদালতে মামলা করবো। সকল বিকাশ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে মনির বলেন, নাম্বার তুলে দেওয়ার জন্য কখনো কোন গ্রাহকের হাতে যেন বিকাশের মোবাইল দেয়া না হয়।
এই ব্যাপারে জামালের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি, মেসেজেরও উত্তর দেন নি।