ইস্কান্দার বাবু : চোখের দৃষ্টি না থাকলেও সূরের সৃষ্টিতে শ্রোতাদের মন মাতিয়ে তুলতে পারেন গোফরান। চোখের দৃষ্টি থামাতে পারেনি জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন গোফরানের জীবনের গতি।সংগীতকে জীবনের পেশা হিসাবে নিয়েছেন এই দৃষ্টিহীন গোফরান।অন্ধ বলে অন্যের দানের উপর নির্ভর করে বসে থাকেন নি তিনি। দৃষ্টি শক্তি না থাকার পরেও ৪র্থ শ্রেণী পর্যন্ত
পড়ালেখা চালিয়ে যান এই দৃষ্টিহীন ছেলেটি। বাবা-মাকে হারানোর পর ছেলেটি অসহায় হয়ে পড়ে।গোফরানের অন্য ৩ ভাই তার দেখাশুনা করে না। তাই এই পৃথিবীতে তার আপন বলতে কেউ নেই।
গোফরান চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার গাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত আব্দুল ওয়াজেদের পুত্র।বর্তমানে তিনি নগরীর রিয়াজউদ্দীন বাজার এলাকায় থাকেন।ছোট বেলায় বাবা-মাকে হারিয়ে ভাইদের অযত্ন -অবহেলায় ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে ছেলেটি। গোফরান কারো করুনার পাত্র না হয়ে সংগীতকে জীবনের পেশা হিসাবে বেছে নিলেন।সংগীত চর্চার জন্য তিনি কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না পেলেও বিভিন্ন সংগীত শিল্পীর সহায়তায় গান শিখেছেন তিনি।
২০১৩ সাল থেকে তিনি চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মোড়ে বসে হারমনিয়াম ও সাউন্ড বক্স নিয়ে গান করা শুরু করলেন।বিভিন্ন সামাজিক প্রোগ্রামেও তিনি গান করেন।তার গানে সন্তুষ্টি এবং
তার অসহায়ত্বের কথা ভেবে শ্রোতারা যেই আর্থিক সহযোগীতা প্রদান করেন সেটা দিয়ে কোন রকমে তার জীবন চলতে থাকে।বিগত ৫ বছর ধরে এভাবেই অতিবাহিত হচ্ছে তার জীবন।
২৫ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ ব্যাংক এশিয়ার সামনে গান পরিবেশন করার এক পর্যায়ে এই প্রতিবেদকের সাথে গোফরানের কথা হয়।গোফরান আরো জানান যে,৫ বছরের প্রচেষ্টায় আজ তিনি এই পর্যায়ে এসেছেন।তিনি জীবনে অনেক বড় হতে চান। বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করে জীবনে যারা সফল হয়েছেন তাদের এক জন হতে চান তিনি।দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও আধুনিকতার সাথে তাল মিলিয়ে এবং ভবিষ্যতের রঙ্গিন কিছু স্বপ্ন নিয়ে ইউ টিউবে Singer gofran নামে একটি একাউন্ট খুলেছেন।সেখানে তার সুমধুর কণ্ঠে গাওয়া ৭-৮ টি গান রয়েছে। তিনি জীবনের উন্নতির জন্য সকলের দোয়া এবং সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেছেন।