শনিবার, ১৪ই জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শনিবার, ১৪ই জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শনিবার, ১৪ই জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ই জিলহজ ১৪৪৬ হিজরি

চীনের ‘ক্যানসিনো’ ভ্যাকসিন মানবদেহের জন্য নিরাপদ প্রমাণিত !

প্রভাতী ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে প্রলয় সৃষ্টি করেছে অতিক্ষুদ্র জীব নভেল করোনাভাইরাস। গুঁড়িয়ে দিচ্ছে মানবজাতির সভ্যতা ও বিজ্ঞানের দম্ভ। কোন ওষুধ নেই, প্রতিষেধক নেই। শুধুই মৃত্যুর অপেক্ষা। এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ এবং আক্রান্ত ৫৩ লাখের বেশি। একটা প্রতিষেধক এলে তবেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচবে দুনিয়া। চেষ্টা চলছে বিভিন্ন দেশে। কোন কোন দেশে কিছুটা হলেও সাফল্য দেখা যাচ্ছে। যদিও কেউই এখনো চূড়ান্ত কিছু রিপোর্ট দেয়নি।

করোনার উৎস চীনের একাধিক গবেষণাগারে ভ্যাকসিন তৈরির গবেষণা চলছে। অবশেষে সেই চীন থেকেই আসতে শুরু করেছে সফলতার খবর। চীনে প্রথম করোনা ভ্যাকসিনের মানব পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সেই ফল অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে সবাই সেটা দেখতে পায়।

শুক্রবার দ্য ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত ফলাফলে চীনের ক্যানসিনো বায়োলজিকস ইনক এর গবেষকরা জানিয়েছেন যে, প্রথমবারের মতো মানুষের মধ্যে পরীক্ষা করা এই করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন নিরাপদ এবং দ্রুত প্রতিরোধ ক্ষমতা জাগ্রত করে বলে প্রমাণিত হয়েছে।

প্রকাশিত ফলাফলে উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রাথমিকভাবে মানুষের উপর পরীক্ষা করে দেখা গেছে ওই ভ্যাকসিন নিরাপদ। ১০৮ জন স্বেচ্ছাসেবীর উপর ভ্যাকসিনটি  পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাদেরকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। একেকটি ভগে একেক রকম ডোজের প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিন দেওয়ার ২৮ দিন পর তাদের শরীরে কোনো প্রতিক্রিয়া হয়নি। অর্থাৎ, এটি যে মানুষের জন্য নিরাপদ, সেই প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে আরো গবেষণার পরই চূড়ান্ত ফলাফল জানানো হবে।

দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ৫০৮ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে পরীক্ষামূলকভাবে। চীনের অ্যাকাডেমি অব মিলিটারি মেডিক্যাল সায়েন্সের বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক চেন উই-এর নেতৃত্বে এই গবেষণা চলছে।

অধ্যাপক চেন বলেন, আমরা প্রথম ট্রায়ালে ভ্যাকসিনটির ইতিবাচক ফলাফল পেয়েছি। তবে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য আরো অধ্যয়ন করা দরকার। এই ফলাফলগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলককে উপস্থাপন করে। পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে নতুন অ্যাডেনোভাইরাস টাইপ ৫ ভেক্টরড কোভিড-১৯ (অ্যাড ৫-এনসিওভি) ভ্যাকসিনের একক ডোজ ১৪ দিনের মধ্যে মানবদেহে ভাইরাস-নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি এবং টি কোষ তৈরি করে।’

বিশ্বজুড়ে বর্তমানে সার্স-কোভি -২ এর বিপরীতে ১০০ টিরও বেশি ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ চলছে। এর মধ্যে প্রায় ১২ টি হিউম্যান ট্রায়াল পর্যায়ে চলে এসেছে। তবে সবচেয়ে এগিয়ে আছে চীনের ক্যানসিনো, তাদের বিকশিত ভ্যাকসিন মিড-স্টেজ স্টাডিতে চলে এসেছে এবং প্রমাণিত হয়েছে যে এটি করোনা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে।

অন্যদিকে, অক্সফোর্ডের একটি টিম আগেই জানিয়েছে যে তাদের গবেষণা আশার আলো দেখাচ্ছে। প্রথম পর্বের হিউম্যান ট্রায়াল বা মানুষের উপর পরীক্ষা আগেই হয়েছে। এবার শুরু হয়েছে দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল। শুক্রবারই জানানো হয়েছে যে পরবর্তী পর্যায়ের গবেষণা শুরু করেছে অক্সফোর্ডের ওই টিম। তার জন্য ১০ হাজার মানুষকে নিয়োগ করা হচ্ছে। যাদের উপর এই ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা করা হবে।

সূত্র- দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print