প্রভাতী ডেস্ক: মাদক মামলায় জামিন পেয়েছেন কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম। রোববার(১৫ মার্চ) সকালে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে জামিন দেন।
এরপর দুপুরের দিকে তাকে কারাগার থেকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।
এসময় হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে সাংবাদিকদের আরিফ বলেন, শুক্রবার মধ্যরাতে যখন খাওয়া-দাওয়া করে শুয়ে পরলাম তখন আমার বাসার দরজায় ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলতে বলে, তারা কারা জানতে চাইলে কোন উত্তর না দেওয়ায় আমি স্থানীয় থানায় ফোন করি এসময় তারা আমার ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে আমাকে মারধর করে। প্রথম আঘাত করেন আরডিসি (সহকারী কমিশনার, রাজস্ব) নাজিম উদ্দিন। এরপর আমাকে টেনে হেঁচড়ে বাইরে বের করে নিয়ে আসেন। মাইক্রোতে তুলার সঙ্গে সঙ্গে আমার হাত ও চোখ বেঁধে ফেলা হয়।
‘এসময় আমাকে এনকাউন্টার দেয়া হবে বলে একটি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান। আমার বাবা নাই, আমি এতিম বলে অনেক অনুনয় করে আমাকে হত্যা না করতে বলি।এটাও বলি যে আমাকে হত্যা করলে আমার ২ সন্তান এবং স্ত্রীর জন্য কেউ থাকবে না। তাদের বিরুদ্ধে আর কখনো সংবাদ প্রকাশ করবো না বলেও কসম করি।এরপরও আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিতে থাকেন মাইক্রোবাসের অন্যরা। তারা আমাকে বারবার কালেমা পড়ে নিতে বলছিলেন।’
আরিফ আরো বলেন, আমি অনেক আকুতি মিনতি করি। আল্লাহর ও আমার সন্তানের কসম দিয়ে তাদের কাছে প্রাণভিক্ষা চাই আমি। এরপরও তারা ক্ষান্ত হচ্ছিলেন না। আমাকে বার বার বলছিলেন কালেমা কালেমা পড়ে নে এবং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন আরডিসি। এরপর সেই স্থান থেকে ঘুরিয়ে আমাকে ডিসি অফিসে নিয়ে আসা হয়। সেখানে অনেক কষ্টে বুঝতে পারি আমাকে ডিসি অফিসে নিয়ে আসা হয়েছে। পরে সেখানে একটি রুমে নিয়ে আবার আমাকে গালি দিতে থাকেন আরডিসি নাজিম উদ্দিন। তারা আমাকে মারধর করেন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেছেন।
সাংবাদিক আরিফ বলেন, সবশেষে আমার চোখবাঁধা অবস্থায় চারটি স্বাক্ষর করিয়েছেন। যেহেতু চোখ বাঁধা ছিল তাই কোথায় স্বাক্ষর করেছি আমি জানি না। এরপর তারা আমাকে কারাগারে রেখে আসেন। তারা যে আমাকে নির্যাতন করেছেন তার চিহ্ন আমার সারা শরীরে আছে।’