নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারের মারমেইড বিচের পাশে পেঁচারদ্বীপ এলাকায় রিসোর্টে নিরাপত্তা কর্মীর সহায়তায় অস্ট্রেলিয়ান এক নারী পর্যটককে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রিসোর্টের মালিকের ভাইসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার (১৫ডিসেম্বর) হিমছড়ির মারমেইড বিচ রিসোর্টে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন রামু থানার ওসি আবুল খায়ের।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রোববার হিমছড়ির মারমেইড বিচ রিসোর্টে ওঠেন অস্ট্রেলিয়ান নারী পর্যটক এলিসা বুকি (১৯)। পরে রাতে ঘুমানোর সময় দুই যুবক ওই কটেজে ঢুকে তাকে ধর্ষণচেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তাদের সাথে ধস্তাধস্তি করে কটেজ থেকে বের হয়ে চিৎকার শুরু করেন তিনি। পরে ধর্ষণচেষ্টাকারীরা পালিয়ে যায়। এ সময় ওই অস্ট্রেলিয়ান নারী আহত হয়। পরে তিনি জরুরি নাম্বার ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চায়।
ওসি আবুল খায়ের জানান, ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই অস্ট্রেলিয়ান পর্যটককে উদ্ধার করে। ধস্তাধস্তিতে ওই নারী পর্যটক আহত হওয়ায় তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মারমেইডের মালিক আনিসুল হক সোহাগের ভাই শামিমুল হক স্যাম, আনচার উল্লাহ, আব্দুল গফুরসহ ৪জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন জানান, অস্ট্রেলিয়ান ওই নারী পর্যটক অন অ্যারাইভাল ভিসায় গত ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশে ঘুরতে আসেন। রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) তিনি কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন গুড ভাইব কটেজে ওঠেন। আগের দিন শনিবার অনলাইনে তিনি কটেজে বুকিং দিয়েছিলেন। রাত সাড়ে ১২টা থেকে ১টার দিকে তার কক্ষে দুই যুবক প্রবেশ করে। যুবকরা জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মুখ চেপে ধরে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে কোনোরকমে ওই নারী আত্মরক্ষা করেন। এরপর তিনি নিজেই কটেজের মালিক ও পুলিশকে বিষয়টি জানান। রামু থানার পুলিশ দ্রুত গিয়ে তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজারে নিয়ে আসে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ সময় কটেজের মালিক শামীমের এক ভাই ও নিরাপত্তাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। পরে পুলিশ জানতে পারে, কটেজের নিরাপত্তাকর্মী নিজেই যুবক গফুর ও বেলালকে খবর দেয়। তারা সেখানে চুরি করার জন্য প্রবেশ করেছিল। এরপর ওই নারীর মুখ চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। রাতেই পুলিশ গফুরকে আটক করেছে। তবে এখনও পলাতক রয়েছে বেলাল।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় ওই তরুণী অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পুলিশ হাইকমিশনের সঙ্গে কথা বলেছে। রামু থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন।
অস্ট্রেলিয়ান ওই পর্যটকের ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভিসার মেয়াদ রয়েছে। তবে তিনি মঙ্গলবার ঢাকায় ফিরে যাবেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন জানান, যেহেতু ঘটনাটি পর্যটন সংশ্লিষ্ট, তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।