নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের বাঁশখালী পৌরসভার মেয়রের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্তে সত্যতা পেয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। পরিষদের মাসিক সভায় কাউন্সিলরদের মতামত কিংবা পরামর্শ এড়িয়ে চলা, টেন্ডারে অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধ নিয়োগ প্রদান, ঘুষ গ্রহণ, খাসকামরার নামে অফিসের পাশে আলাদা একটি কক্ষে মহিলা কর্মচারীদের সঙ্গে অনৈতিক আচরণসহ ১২টি অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। পৌরসভার ৪কাউন্সিলর এই অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার চট্টগ্রাম এর উপ-পরিচালক ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি গত ২২ অক্টোবর পৌর কার্যালয়ে অভিযোগের শুনানী করলেও পৌর মেয়র শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে মেয়রের কাছ থেকে গত ৭ নভেম্বর বক্তব্য নেয়া হয়। বক্তব্য পরবর্তী তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করার জন্য ৭ দিন সময় দেয়া হয়।
বেঁধে দেওয়া নির্দ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা প্রদান না করায় গত ১৮ নভেম্বর স্থানীয় সরকার চট্টগ্রাম ০৫.৪২.১৫০০.৭ ০১.০৪. ০৮০.১৯-৬৫২ স্মারক মূলে এক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন এবং তাতে ৬টি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
তদন্তে যে সব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে সেগুলো হলো পৌরসভার সামনে বরাদ্দকৃত দোকানসমূহ নিয়মনীতি না মেনে তৈরি করা ও ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার রশিদ দেখাতে না পারা,জলদী মিয়ার বাজার ইজারা দেয়ার টাকা আদায় না করা, পৌরসভায় গ্যাসলাইনের অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ ঘুষ গ্রহণ করা, পৌরসভার বৈদ্যুতিক মালামাল কোটেশনে ৩০ লক্ষ টাকা দেখানো হলেও রেজি: বহিতে ১২ লক্ষ টাকার মালামাল-বাকি টাকার যথাযথ হিসাব নেই এবং প্রতি গজ ২৮ টাকার তারের দাম ১২০ টাকা দেখানো হয়, পৌরসভার মেকানিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রিক্যাল পদে নিয়োগের জন্য প্রসূন দাশের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এই তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে ১০টি প্রস্তাবসহ ৮ জন কাউন্সিলর বাশঁখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তারের বরাবরে রবিবার (২৪ নভেম্বর) মেয়রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেছেন।
অনাস্থা প্রদানকারী কাউন্সিলররা হলেন- দিলীপ চক্রবর্তী, মো. দেলোয়ার হোসেন, নজরুল কবির সিকদার, বাবলা কুমার দাশ, তপন কান্তি বড়ুয়া, রুজিনা আক্তার, আবদুর রহমান ও নার্গিস আক্তার।
অভিযোগ ও অনাস্থা প্রস্তাবের ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন, ‘আমার দপ্তরে ৮ জন কাউন্সিলর স্বাক্ষরিত একটা আবেদন জমা দিয়েছে। আমি জেলার মিটিংয়ে থাকায় তা নিজে গ্রহণ করতে পারিনি তবে অবগত হয়েছি।’