প্রভাতী ডেস্ক: আ স ম আব্দুর রব ও মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে এক মঞ্চে বসে বক্তব্য দিলেন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই আলোচনা সভায় ছাত্রদলের দুই সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন ও শফিউল বারী বাবুর সঙ্গে বিশেষ অতিথি ছিলেন নূর।
আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শাহিদা রফিকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব। ডাকসুর আরেক সাবেক সভাপতি ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও ছিলেন বিশেষ অতিথি।
২০১৮ সালের ১১ মার্চের ডাকসু নির্বাচনে নূর ভিপি নির্বাচিত হওয়ার পর বিএনপি ও রব-মান্নাদের জোটের নেতৃত্ব দেওয়া কামাল হোসেনের দল গণফোরামের ইফতার মাহফিল ও অন্য একটি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন নূর। তবে জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কোনো অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে আলোচক হিসেবে এটাই তার প্রথম উপস্থিতি।
‘ছাত্র রাজনীতি: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শিরোনামের এই আলোচনা সভায় সরকার হটাতে ছাত্রদের ভূমিকা প্রত্যাশা করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, “আমাদের দেশের ছাত্ররাই হচ্ছে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ‘ভ্যানগার্ড’। সেটা বায়ান্ন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত তাই চলেছে।
“যতদিন পর্যন্ত গণতন্ত্রের সংকট থাকবে ততদিন পর্যন্ত গণতন্ত্রের ভ্যানগার্ড ছাত্ররাই হবে। আমরা ছাত্রদেরকে সত্যের ধারক-বাহক দেখতে চাই।”ক্ষমতাসীন সরকার চলে না গেলে ছাত্র সমাজ তাদের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা এবং নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
মান্না বলেন, ‘মৃত্যুঘণ্টা বাঁজছে, উনারা টের পাচ্ছেন। আমরা এখনো অনেকে টের পাচ্ছি না। আমাদের এখন সাহস করে বলা দরকার “এনাফ ইজ এনাফ”। ১০ বছর জবর-দখল করে রেখেছেন। এবার ভালোয় ভালোয় চলে যান। যদি চলে না যান এই ছাত্র সমাজ তাদের বিদায়ের ঘণ্টা বাজিয়ে দেবে।’
দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, ‘এগুলো ভিসি না, ওসি; বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যারা আছেন। একেকজন ভিসিকে মনে হয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সর্বকনিষ্ঠ সদস্য।’
আলোচনা সভায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গ তুলে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ভিসিকে রক্ষা করার জন্য এত চেষ্টা করছে কেন? খোদ প্রধানমন্ত্রী কেন তার পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। মাথার মধ্যে চিন্তা ঢুকেছে, বরিশাল রাখতে পারলাম না, গোপালগঞ্জ রাখতে পারলাম না, জাহাঙ্গীনগর, তাও আবার ছোট বোনের বান্ধবী! তাকেও যদি রাখতে না পারি, তাহলে তো কিছুই রাখতে পারব না। অ্যান্ড ইট ইজ দ্য ফ্যাক্ট। অবস্থা সেদিকে যাচ্ছে।’
ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা বলেন, ‘ছাত্ররা রাজনীতি করবে, জাতীয় রাজনীতি করবে। যদি পেঁয়াজের দামের কথা বলে, যদি চালের দামের কথা বলে, যদি অন্য যেকোনো জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি কথা বলে। তাহলে বেগম জিয়ার মুক্তির দাবি করতে পারে তারা। এটা তো দলীয় লেজুড়বৃত্তি করা হয়ে গেল। তখন আপনারাই বলবেন, দলীয় লেজুড়বৃত্তি চলবে না। তাহলে বেগম জিয়া জেল খাটতে খাটতে মারা যাবেন, ছাত্ররা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবেন। ওই রকম ছাত্র রাজনীতি আমাদের দেশে কখনো হয়নি।’
সংগঠনের সভানেত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি ও প্রকৌশল অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক শাহিদা রফিকের সভাপতিত্বে ও মোকছেদুর রহমান আবিরের পরিচালনায় আলোচনা সভায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ডাকসুর সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর, স্বাধীনতা ফোরামের আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।