এম. জিয়াউল হক: চিকিৎসা ব্যবস্থায় এলোপ্যাথিকের পরেই হোমিওপ্যাথিকের অবস্থান। এছাড়া এক শ্রেণীর মানুষ হোমিও চিকিৎসার উপর এখনো সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। কিন্তু বর্তমানে কতিপয় অসাধু হোমিও চিকিৎসকের কারসাজির কারণে সাধারণ রোগীরা হোমিও চিকিৎসা ব্যবস্থা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
চট্টগামের লালদিঘী এলাকাটি হোমিও ঔষধের আড়ৎ হিসাবে অতি সুপরিচিত। ঔষধ বিক্রয় ছাড়াও এই এলাকায় অনেক সুপরিচিত এবং অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসক চেম্বার করেন। কিন্তু কতিপয় হোমিও প্রতিষ্ঠানের মালিকের ভেজাল কার্যক্রম ও দূর্নীতির কারণে এই হোমিও এলাকার সুনাম ম্লান হতে যাচ্ছে। তারা নিয়ম বহির্ভূতভাবে সারাদেশে ভেজাল ঔষধ সাপ্লাই করে থাকেন। এমনকি তারা স্প্রীট সাপ্লাইয়ের মত জঘন্য কাজের সাথেও সম্পৃক্ত।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএস হোমিওর মালিক ডা: স্বপন পাল দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্প্রীট এবং ভেজাল ঔষধ সরবরাহ করে আসতেছিলেন। মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে তার সখ্যতা ছিল। নিষিদ্ধ হওয়ার পরেও অবৈধভাবে স্প্রীট সরবরাহ করতেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন হোমিও চিকিৎসক বলেন, সাধন চন্দ্র পাল এবং স্বপন পাল বিএস হোমিওর মালিক। স্বপন পাল তেমন চেম্বারে না বসলে কিছু লোকজন নিয়ে চেম্বারে এসে স্বল্প সময় পরে আবার চলে যেতেন।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বপন পালের বড় ভাই সাধন চন্দ্র পাল বলেন, ‘আমার ছোট ভাই একজন হোমিও চিকিৎসক এবং এক সময় এই প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় ছিলো, এখন নেই। বর্তমানে সে সাংবাদিকতা করে। আমার জানামতে সে কোন স্প্রীট কিংবা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত নয়।’
বিএস হোমিওতে উপস্থিত মহিলা চিকিৎসক এবং সাধন চন্দ্র পালের শ্যালিকা অনিমা পাল বলেন, সাধন চন্দ্র পাল একজন কেমিষ্ট। তিনি আমদানীকৃত হোমিও ঔষধ মিক্স করে সারাদেশে সরবরাহ করেন। বাজারে তাদের ঔষধের ভালো চাহিদা আছে বলেও জানান এই চিকিৎসক।
ঔষধ প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা বলেন, বিএস হোমিও সেন্টারের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটা অভিযোগ রয়েছে। কোন ধরণের অনুমতি ছাড়াই ঔষধ বাজারজাত করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ড্রাগ লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে ব্যাবস্থাপত্র অনুযায়ী রোগীকে ঔষধ বিক্রির জন্য, সরবরাহের জন্য নয়। সরবরাহের প্রমাণ পেলে তার লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভেজাল মদ তৈরীর কারখানায় স্প্রীট সাপ্লাইয়ে জড়িত থাকার কারণে লালদীঘি পাড়ের পুরাতন গির্জা এলাকার ইকরা হোমিও ফার্মেসির মালিক ইকরামুল হক, লালদিঘী পাড়ের জাহিদ বোর্ডিংস্থ বিএস হোমিও সেন্টারের মালিক স্বপন পালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
(আগামী সংখ্যায় প্রকাশিত হবে বিএস হোমিও সেন্টারের আরো ভেজাল কার্যক্রমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন)