প্রভাতী ডেস্ক: গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার বিদেশ থেকে ৬১ টাকায় গ্যাস কিনে দেশে ৯ টাকায় বিক্রি করছে। চীন সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
দেশে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রোববার বামজোটের ডাকা হরতাল পালিত হওয়া সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ানো সত্ত্বেও সরকার ১০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়।
তিনি আরো বলেন, যে দামে সরকার জ্বালানি ক্রয় করে সে দামে বিক্রি করা হলে দেশে জ্বালানিমূল্য আরো অনেক বেড়ে যাবে।
যারা আন্দোলন করছে তাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, তাহলে যে দামে গ্যাস কিনেছি সেই দামেই বিক্রি করি?
সরকার গত ৩০ জুন সব পর্যায়ে গ্যাসের দাম গড়ে ৩২.৮ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দেয় যা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যদি দেশের উন্নতি করতে চাই, এই এনার্জি একটা বিষয়। আপনারা যদি লক্ষ্য করেন, ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের জিডিপি কতটুকু বেড়েছে? আর আমরা এখন জিডিপি ৮.১ শতাংশ পর্যন্ত অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। এর কারণ আমরা এনার্জির ক্ষেত্রে যথেষ্ট মনোযোগ দিয়েছি, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সেখানে দাম যেটুকু বাড়ানো হয়েছে, এটা যদি না বাড়ানো হয়, তাহলে আপনাদের কাছে দুটো পথ আছে। হয় আমরা এলএনজি আমদানি কমিয়ে দিয়ে এনার্জির ক্ষেত্র সংকুচিত করে ফেলব, তাতে উন্নতি হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিল্পায়ন করতে হলে, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হলে, সার উৎপাদন করতে হলে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে হলে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে হলে সরকারকে এলএনজি আমদানি করতেই হবে। তিনি বলেন, এলএনজি আমদানি করতে আমার কত টাকা খরচ হয়, সেই হিসাবটাতো আগে জানতে হবে। প্রতি ঘনমিটার এলএনজি আমদানিতে আমাদের খরচ পড়ে ৬১.১২ টাকা। সেটা আমি দিচ্ছি ৯.৮০ টাকায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়া সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসে। তিনি বিক্রিতে রাজি হননি বলে বেশি ভোট পাওয়ার পরও ক্ষমতায় আসতে পারেননি।
এ ছাড়া ২০০৪-৫ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারতে গ্যাস সরবরাহের প্রস্তাবে বিএনপির রাজি না হওয়ার সমালোচনাও করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি হলে এ প্রস্তাবে রাজি হতাম এবং নিজের ভাগ রেখে দিতাম। তাতে আমাদের গ্যাস সঞ্চয় বাড়ত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীন চেষ্টা করবে। চীন নিজেকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়কেই বন্ধু বলে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ে বলেছেন তারা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখবে।