প্রভাতী ডেস্ক: সকল রাজনীতিবিদরা শেষ জীবনে নিজের অতিবাহিত জীবন নিয়ে বই লিখেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও সেটার ব্যতিক্রম না।তাঁর আত্মজীবনীমূলক বইয়ের নাম, “আমার কর্ম, আমার জীবন”। যদিও এই বইতে নানা স্পর্শকাতর বিষয় এড়িয়ে গেছেন তিনি। একটি অধ্যায়ে তার ক্ষমতা গ্রহণ ও পদত্যাগ নিয়ে লিখেছেন।
‘জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ড’ শীর্ষক অধ্যায়ে এরশাদ লিখেন,‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা ও জাতীয় ৪ নেতা হত্যার পর ১৯৮১ সালের ৩০শে মে জাতির কপালে আরেকটি কলঙ্কের চিহ্ন এঁকে দেয়া হয়। চট্টগ্রামের সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল আবুল মঞ্জুর বীর উত্তমের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একদল বিপদগামী অফিসারের হাতে শাহাদত বরণ করেন প্রেসিডেন্টে জিয়াউর রহমান। প্রথম দুটি হত্যাকাণ্ডের (বঙ্গবন্ধু ও চার নেতা) সময় আমি দিল্লিতে ছিলাম। কিন্তু জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের সময় আমি ঢাকাতেই ছিলাম। তখন সেনাবাহিনীর চিফ অব আর্মি স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলাম।’
এরশাদ লিখেন, ‘জিয়ার আগ্রহেই আমার পদোন্নতি হয়। তিনি আমাকে বিশ্বাস করতেন। ৩ বছর ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ হিসেবে বিশ্বাস ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করায় ১৯৭৮ সালের ১লা ডিসেম্বর তিনি আমাকে চিফ অব আর্মি স্টাফ হিসেবে পদোন্নতি দেন। ৩০শে মে ভোর চারটায় আমি জিয়াউর রহমান হত্যার দুঃসংবাদটি জানতে পারি।’
আরেকটি অধ্যায়ে এরশাদ লেখেন,‘ প্রেসিডেন্ট জিয়ার হত্যাকারী ছিলেন জেনারেল মঞ্জুর। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের করলেন না। আমাকে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় করে দেয়ার উদ্দেশ্যে দীর্ঘ ১৪ বছর পর ওই হত্যাকারীকে হত্যার দায় আমার ওপর চাপিয়ে দিলেন।’
ক্ষমতা দখল ও ক্ষমতা হস্তান্তর প্রসঙ্গে তিনি লেখেন,‘আমি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের আহ্বানে সংবিধান রক্ষায় ক্ষমতা গ্রহণ করি।প্রধান বিচারপতির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতে কতিপয় বিরোধী দল অনমনীয় ভাব পোষণ করা অব্যাহত রাখলেন। আমি গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি।’