ঘনিয়ে আসছে মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। আমাদের দাবী আদায় করার সুবর্ণ সুযোগ এসেছে। একজন নির্বাচক হিসেবে আমাদের উচিৎ যেই ব্যক্তি জনগনের পক্ষে কথা বলে, জনগনের অধিকার আদায়ে পক্ষপাতিত্ব করে না, জনগনের মঙ্গল কামনা করে তাকে জনপ্রতিনিধি বানানো। অন্যতায় জনগনকে ৫টি বছর ভুলের মাশুল দিতে হবে।আমি ব্যক্তিগতভাবে তাকেই ভোট দেব এবং সহায়তা করব যে জনগনের অধিকার আদায় করার জন্য কাজ করবে, সে যেই হোক।
এক সময় মাতারবাড়িতে কেউ বেকার ছিল না। কিন্তু কয়লা বিদ্যুতের কারণে আমাদের ভিটে মাটি জমি হারিয়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি,হারিয়েছি কর্মস্থল। যেখানে উৎপাদন হত লবণ আর বর্ষা মৌসুমে মাছের চাষ। বর্তমান সরকার দেশকে উন্নয়নের জন্য মাতারবাড়ীকে শিল্প এলাকায় পরিণত করার লক্ষ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা মোতাবেক আমরা কোন রকম বাধা বিপত্তি ছাড়াই আমাদের পূর্ব পুরুষের শেষ সম্বল জায়গা -জমি ছেড়ে দিয়েছি। বিনিময়ে সরকার স্থানীয়দেরকে ক্ষতিপূরণ বাবদ যে পরিমান টাকা দিয়েছে অধিকাংশ মানুষ তাও পায়নি। জমির ক্ষতিপূরণ ছাড়া অন্যন্য যে সকল ক্ষতিপূরণের কথা বলা হয়েছে তাও আমরা অধিকাংশ জনগন পায়নি। স্থানীয় কুচক্রীমহল ও দালালরা মিলে আমাদের অধিকার খর্ব করে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করার জন্য বিভিন্ন সিন্ডিকেট করে লুটে পুটে খাচ্ছে।
সরকার স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বললেও এলাকার নেতা দালাল ও বহিরাগত কিছু কর্মচারী মিলে আমাদের অধিকার ও দাবি- দাওয়া না মেনে বিভিন্নভাবে লুটে নিচ্ছে। ফলে এলাকার মানুষ কর্মহারা হয়ে বেকার অবস্থায় অতি কষ্টে মানবেতর জীবন- যাপন করছে।স্থানীয়দের অগ্রাধিকার হিসেবে যেখানে ৮০% লোক নিজ এলাকার হওয়ার কথা ছিল সেখানে দালালরা এলাকার লোক বাদ দিয়ে বহিরাগতদের নিয়োগ দিচ্ছে ৮০% আর স্থানীয়রা চাকরি পাচ্ছে ২০%। এ নিয়ে এলাকার ছাত্র-যুব সমাজ এগিয়ে এলেও তাদের বিভিন্ন মাধ্যমে পিছু হটিয়ে দিচ্ছে। যারা নিজ অধিকার নিয়ে কথা বলতেছে তাদেরকে সুবিধাবাদীরা দালাল সন্ত্রাসী বলে অপবাদ দিচ্ছে। এলাকার সচেতন জনগন বিভিন্ন মিটিং, মিছিল ও জেলা উপজেলার সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্মারকলিপি দিয়েও আমরা কোন সুফল পায়নি। সরকারের পক্ষ থেকে কোন প্রতিনিধি এলাকায় এসে জনগনের খোঁজ খবর নিতে চাইলে কুচক্রীমহল তাদেরকে জনগন পর্যন্ত পৌঁছতে দিচ্ছে না।
আমি এলাকার সচেতন জনগনকে নিজ অগ্রাধিকার বিষয়ে আরো সচেতন হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। মনে রাখবেন যে ব্যক্তি ক্ষমতায় থেকেও এলাকার অসহায় এবং দরিদ্র মানুষগুলোর দারিদ্রতা দেখেও নিশ্চুপ থাকে, বুঝতে হবে সে জনগণের কল্যাণের জন্য প্রযোজ্য নয়। আগামী স্থানীয় নির্বাচনে সেসব নেতা/দালাল জনপ্রতিনিধির নামে আমাদের জন্মভুমি মাতারবাড়িকে লুটে খাওয়ার পাঁয়তারা করছে তাদের বয়কট করুন।।
আমরা চাই যোগ্যতা নিয়ে কেউ উঠে আসুক, যে মাতারবাড়িবাসীর সেবা করবে। কিন্তু সেটা হতে দিচ্ছে না মাতারবাড়ির কলুষিত রাজনীতি। গ্রুপিং আর প্রতিহিংসা পরায়ণ রাজনীতির শিকার হচ্ছে ত্যাগী,পিতা মুজিবের আদর্শে আদর্শিত ছাত্রসমাজ,যুবসমাজ,আমজনতা ও শিক্ষিত সমাজ। গ্রুপিং আর প্রতিহিংসার কারণে প্রকল্পের কর্মসংস্থানে চলছে দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি। কেউ আছেন টাকার পাহাড়ে চড়তে আবার কেউ বা আছেন সম্ভ্রমের নেশায়।মুখে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বলে কাজে গরমিল করলে ত্যাগী নেতা-কর্মী সর্বোপরি সাধারণ জনমনেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি বিড়ম্বনার জন্ম হবে। দয়া করে এসব বন্ধ করুন।
জনগনের মনে একটাই প্রশ্ন মাতারবাড়িতে কর্মসংস্থানহীন এত দরিদ্র শ্রমিক থাকতেও কেন বাহির থেকে হাজার হাজার শ্রমিক আনতেছেন জনাব? আমজনতা ষড়যন্ত্র বুঝেনা, বুঝতে চায়ও না। আমজনতা চায় শান্তি,সুবিচার,দালালমুক্ত সমাজ,মৌলিক অধিকার।কারণ ভোটের মালিক জনগণ।ষড়যন্ত্র বা অশান্তির সৃষ্টি সেসব ক্ষমতার অধিষ্ঠিতজন করে যিনি নির্বাচনের আগে জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতির নূন্যতম ১%ও পূরণ করবে বলে মনে হয় না। এসব নেতাদের আগামী নির্বাচনে বয়কট করুন। কারণ সেসকল নেতা জানেন যে,জনগণের কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে মৌলিক অধিকারের কোনটাই তারা করবে না। বরং পকেট ভরার দৌঁড়ানিতে থাকবে এবং তারা এটাও জ্ঞাত যে,জনগণ তাহাদের এসব কর্মকান্ড ভাল করেই জানেন ও খবর রাখেন।তাই তারা গোপনীয়তা প্রকাশের ভয়ে আরো মারাত্মক গুপ্ত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। যাতে জনগণের মনোযোগ অন্য কোন মোড়ে নিয়ে যেতে পারে। প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণে সাধারণ জনগণ ভোগান্তির শিকার হয়। স্থানীয় নির্বাচনে এসব নেতাদের বয়কট করুন। এছাড়া মাতারবাড়িতে এনজিও সুশীলদের হাতে সাধারন জনগণ নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছে দীর্ঘ সময় ধরে।সুশীলদের অনিয়মকৃত কাজে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।।
আমরা মাতারবাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত জনগনকে একটু সুনজরে দেখার জন্য সরকারের সহায়তা কামনা করছি।
এলাকাবাসির পক্ষে-
মোঃ এনামুল হক মাহিন, অর্থনীতি বিভাগ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।।