রবিবার, ১৬ই মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রবিবার, ১৬ই মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রবিবার, ১৬ই মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই রমজান ১৪৪৬ হিজরি

বরগুনায় রিফাত হত্যার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

প্রভাতী ডেস্ক: বরগুনার আলোচিত শাহ নেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে  বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে বরগুনা জেলার পুরাকাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, একটি শর্টগান ও বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ।

নয়নের নিহতের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মারুফ হোসেন। তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে তিনটি চাপাতি, একটি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। নয়ন বন্ডের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে বন্দুকযুদ্ধে কুখ্যাত সন্ত্রাসী নয়ন বন্ডের মৃত্যুর খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছে বরগুনার সাধারণ জনগণ। আজ ভোর ছয়টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, নয়নের লাশকে ঘিরে শতশত স্থানীয় এলাকাবাসীর ভিড়। অনেককেই বলতে শোনা গেছে, রিফাত হত্যাকারী নয়ন বন্ডের এমন পরিণতির প্রতীক্ষায় ছিলো পুরো দেশবাসী।

এছাড়াও এই হত্যা মামলার ১১ নম্বর আসামি অলি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে সনাক্ত করা অপর এক অভিযুক্ত আসামি তানভীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর কাছে স্বেচ্ছায় তারা এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তা ছাড়াও এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিন দিন রিমান্ড শেষে নাজমুল হাসানকে একই আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। অন্যদিকে সাগর ও কামরুল হাসান সাইমুন নামের অপর দুজনের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী তাদের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।

এ বিষয়ে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, “রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১১ নম্বর আসামী অলি এবং হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তার করা তানভীর আদালতে রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। এ ছাড়াও এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা সাগর, সাইমুন ও নাজমুল আহসানকে ৫ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তাদের প্রত্যেকের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদের মধ্যে নাজমুল আহসান আগেও তিন দিনের রিমান্ডে ছিলো। তিন দিনের রিমান্ড শেষে আবারো তার ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়।

তিনি আরো বলেন, এ মামলার ১২ নম্বর আসামি টিকটক হৃদয় গ্রেপ্তার হলেও তিনি বরগুনা জেলা পুলিশের কাছে পৌছায়নি। তাই তাকে আদালতে তোলা সম্ভব হয়নি।

গতকাল সোমবার বেলা তিনটার দিকে রিফাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অগ্রগতি বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে সংবাদ সম্মেলন করেন বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, আরো একজন আসামিকে আটক করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করা যাবে না।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, রিফাত হত্যাকাণ্ডের সকল আসামি ধরতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। খুব শিগরিই সকল আসামিকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হবে পুলিশ। এ নিয়ে এই পর্যন্ত মোট ৯জন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছেন।

রিফাত হত্যকান্ডে এ পর্যন্ত যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তারা হলেন- এজাহারভুক্ত ৪ নম্বর আসামি চন্দন ওরফে জয় চন্দ্র সরকার (২১), ৯ নম্বর আসামি মোঃ হাসান (১৯)। এছাড়া তদন্তেপ্রাপ্ত সন্দিগ্ধ আসামি মোঃ নাজমুল হাসান (১৮), তানভির (২২), মোঃ সাগর (১৯), কামরুল হাসান সাইমুন (২১), ১১ নম্বর আসামী অলি এবং টিকটক হৃদয়সহ আরো একজন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print