
প্রভাতী ডেস্ক: প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ এখন বাংলাদেশ অতিক্রম করছে। এটি এখন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় অবস্থান করছে। খবর- বাসস
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ জানান, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড় আকারে শনিবার সকাল ৬টায় সাতক্ষীরা, যশোর ও খুলনা অঞ্চল এবং এদের পাশ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করছিল।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে এবং সারা দেশে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমূদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস জানায়।
ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এর মধ্যে ফণির আঘাতে কিশোরগঞ্জে ৬, বরগুনায় ২, ভোলায় ১, নোয়াখালীতে ১, বাগেরহাটে ১, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় ১,নেত্রকোণায় ২ জন নিহতের সংবাদ পাওয়া গেছে।
এক সময় মধ্যরাতে বাংলাদেশে আঘাত হানার কথা বলা হলেও পুরী থেকে কিছুটা দিক পরিবর্তন করে স্থলপথে খড়গপুর দিয়ে ঢোকায় এগোতে সময় লাগছে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে আবাহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, শনিবার সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে খুলনা ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে আঘাত হানবে ফণী। ফণী ভারতের উড়িষ্যা থেকে বাংলাদেশের দিকে ঘণ্টায় ২১ কিলোমিতার বেগে ধেয়ে আসছিল বলেও জানান। একই সঙ্গে স্থলভাগের ওপর দিয়ে আসায় জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা কম বলেও মন্তব্য করেন এই আবহাওয়াবিদ।
প্রসঙ্গত ঘূর্ণিঝড় ‘ফনি’ নামটি দিয়েছে বাংলাদেশ। এর অর্থ সাপ বা ফণা তুলতে পারে এমন প্রাণী। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার আঞ্চলিক কমিটি একেকটি ঝড়ের নামকরণ করে। ভারত মহাসাগরের ঝড়গুলোর নামকরণ করে এই কমিটির নয়টি দেশ। দেশগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ওমান এবং ইয়েমেন।









