মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই শাবান ১৪৪৬ হিজরি

বেনজির আহমদের পিএইচডি ডিগ্রী লাভ

প্রভাতী ডেস্ক: ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করলেন র্যাব মহাপরিচালক  বেনজীর আহমেদ । র্যাবের মিডিয়া উইং এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মহাপরিচালক র্যাব ফোর্সেস জনাব বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন। “আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে বাংলাদেশের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর অবদান” শীর্ষক অভিসন্দর্ভের জন্য তিনি এই ডিগ্রী অর্জন করেন। ইতিপূর্বে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজী সাহিত্যে এম.এ এবং এল.এল.বি ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি এম.বি.এ ডিগ্রী অর্জন করেন।

এছাড়া তিনি পেশাগত বিষয়ে এশিয়া প্যাসিফিক সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্ট্যাডিজ হাওয়াই, যুক্তরাষ্ট্র, চার্লস ষ্ট্রার্ট ইউনিভার্সিটি, ক্যানবেরা, অস্ট্রেলিয়া, বিশ্ব ব্যাংক আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সিঙ্গাপুরে পড়াশোনা করেন। ১৯৮৮ সালে জনাব বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) ৭ম (বিসিএস) এর মাধ্যমে পুলিশ ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার পদে চাকুরীতে যোগদান করেন। বর্তমান দায়িত্বের পূর্বে তিনি প্রায় সাড়ে চার বছর ডিএমপি পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জনাব বেনজীর একাধিক বার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও তিনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিভাগে চীফ অব মিশন ম্যানেজমেন্ট এন্ড সাপোর্ট সার্ভিসেস হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। তার কর্মদক্ষতায় তিনি আইজিপি এর এক্সাম্পলারী গুড সার্ভিস, তিনবার জাতিসংঘ শান্তি পদক প্রাপ্ত হন। এছাড়া তিনি সরকার কর্তৃক সর্বমোট পাঁচ বার পেশাগত সর্বোচ্চ পদক বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) (২০১১, ২০১২, ২০১৪, ২০১৬ এবং ২০১৮) এ ভূষিত হন।

সম্প্রতি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স বিভাগ হতে এবং বিজনেস স্টাডিজ ফ্যাকাল্টির ডীন প্রফেসর শিবলী রুবায়েত উল ইসলামের তত্ত্ববধানে ডিবিএ ১ম ব্যাচের ১ম শিক্ষার্থী হিসেবে (রেজি নং-১৩/২০১৪-
২০১৫) তিনি ডক্টর অব বিজনেজ এডমিনিষ্টেশন ডিগ্রী অর্জন করেন। তার গবেষণা মূলত বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী হতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে নিয়োজিত শান্তিরক্ষীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো। তিনি তার অভিসন্দর্ভে জাতীয় অর্থনীতিতে পুলিশ শান্তিরক্ষীদের অবদান এবং শান্তিরক্ষা মিশনসমূহ প্রায় তিন দশক দায়িত্ব পালন লব্ধ অভিজ্ঞতা দেশের পুলিশ সংগঠনে ইতিবাচক পরিবর্তনে কি ধরনের ভূমিকা পালন করেছে সেটি তুলে আনার চেষ্টা করেছন।

তিনি তাঁর গবেষণায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যগণ বিশ্বশান্তি রক্ষায় অনন্য অবদান রাখার পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা লাভ করার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং শান্তিরক্ষীদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা অর্জনে শান্তিরক্ষা মিশন এর ভূমিকা অত্যান্ত বস্তুনিষ্ঠভাবে তথ্য উপাত্তের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন। তাঁর গবেষণার প্রথম ভাগে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের ফলে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সেবার মান অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন এর উপর প্রভাব উদঘাটন করেছেন। দ্বিতীয়ভাগে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা অর্জনের মাধ্যমে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তিগত সততা চর্চার ফলে দূর্নীতি প্রতিরোধে ইতিবাচক সহায়ক ভূমিকার বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে। পুলিশের সেবার মান সম্পর্কে মানুষের ধারণা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতার প্রভাব বিশ্লেষণ করেছেন। এছাড়াও ব্যক্তিগত সততা এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার সাথে দূর্নীতির সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের ফলে প্রাপ্ত সুবিধাসমূহ গুণগত এবং পরিমাণগত এই দুই দিক থেকেই বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বাংলাদেশী সৈনিক এবং পুলিশ সদস্যদের নিকট শান্তিরক্ষা মিশন একটি লাভজনক কার্যক্রম হিসেবে বিবেচিত হয়। তাদের অর্জিত আয় প্রধানত জমি ক্রয় এবং দ্বিতীয়ত ব্যাংকে সঞ্চয়ের মাধ্যমে তাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকে বলে তিনি তার গবেষণাপত্রে উপস্থাপন করেছেন।

দীর্ঘ গবেষণালব্ধ এই অর্জনের জন্য তিনি তাঁর সুপারভাইজার প্রফেসর শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম, ডীন, বিজনেস ষ্টাডিস অনুষদ এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন। এছাড়াও উক্ত বিভাগের অন্যান্য সকল সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ ও বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব ফোর্সেস এর সহকর্মীদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। এই গবেষণাকর্মে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য তিনি তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।

তাঁর এই তাৎপর্যপূর্ণ ও বিশ্লেষণধর্মী গবেষণালব্ধ তথ্যবহুল লেখনী দ্বারা অর্জিত জ্ঞান সামাজিক অগ্রগতি ও বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীর জন্য যুগোপযোগী কর্মকৌশল নিরূপনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। ফলশ্রুতিতে সামাজিক নিরাপত্তা যেমন নিশ্চিত হবে তেমনি অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিধারা পূর্বের তুলনায় বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে এটাই সকলের প্রত্যাশা।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print