স্টাফ রিপোর্টার:বিএনপি বার বার অভিযোগ করে যাচ্ছেন রাজনৈতিক কারণে গ্রেনেড হামলা মামলায় দলীয় নেতৃবৃন্দকে অভিযুক্ত করেছে সরকার।এইদিকে রায় বিপক্ষে গেলে কৌশল অবলম্বনের কারণে কেন্দ্রীয় বিএনপি মাঠে নামবে না বললেও রায় বিপক্ষে গেলে প্রতিবাদ জানাতে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি।
অপরদিকে রায়কে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরণের সহিংসতা মোকাবিলায় মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগও। বিএনপি যেন কোনো নাশকতা করতে না পারে এমন আশঙ্কায় নাশকতা মোকাবেলা করতে প্রস্তুত রয়েছে নগর পুলিশ।
চট্টগ্রাম মহানগরের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মাসুদুল হাসান বলেন, বহুল আলোচিত এ রায়কে কেন্দ্র করে যাতে কোনো প্রকার নাশকতা ও বিশৃংঙ্খলা না ঘটে সে ব্যাপারে নগর পুলিশের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে। নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পোষাকে এবং সাদা পোষাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন থাকবে। কোনো পক্ষকেই যে কোনো ধরনের বিশৃংখলা করতে দেয়া হবে না।
বহুল আলোচিত এ রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি প্রথম দিকে মাঠে থাকার ঘোষণা দিলেও এখন সে অবস্থান থেকে সরে এসে অনেকটা কৌশলী অবস্থান নিয়েছে।
এর আগে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়কে কেন্দ্র করে ১০ অক্টোবর নগরীর লালদীঘি মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিল বিএনপি। লালদীঘিতে অনুমতি না পেলে দলীয় কার্যালয় মাঠে তারা অবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু পুলিশের অনমুতি না পাওয়ায় সেই কর্মসূচী থেকে পিছু হটেছে তারা।
তারা আগামী ১৩ অক্টোবর লালদীঘি মাঠে সমাবেশ করার জন্য আবারও অনুমতি চেয়েছে নগর পুলিশের কাছে।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা যায়, ১০ অক্টোবর একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অনেক বিএনপি নেতার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে। তাই বিএনপি নগরীতে নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে। এ কারণে তারা নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিতে শুরু করেছে।
জনগণের জানমাল রক্ষায় মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) থেকে সকল নেতাকর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা অবস্থান নিতে ইতোমধ্যে নগরীর ১৭টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট নির্ধারণ করেছে।
নির্ধারিত ১৭ স্পটগুলো হলো-নগরীর দারুল ফজল মার্কেট চত্বর, ২৯ নম্বর পশ্চিম মাদারবাড়ি ওয়ার্ড, আন্দরকিল্লা মোড়, ২১ নম্বর জামালখাঁন, ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ও অক্সিজেন মোড়, ২২ নম্বর এনায়েত বাজার, ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ি, ৩১ নম্বর আলকরণ, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গিবাজার, ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ড, দেওয়ানহাট মোড়, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী, ১৪ নম্বর লালখান বাজার, ২৩ নম্বর উত্তর পাঠানটুলী ও ২৪ নম্বর উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ড।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বললেন, ১০ অক্টোবর নারকীয় বোমা হামলার বিচারিক রায় ঘোষণার দিনকে কেন্দ্র করে নারকীয় তাণ্ডব ঘটানোর পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ জিরো টলারেন্স ভূমিকা পালনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশে থাকবে।
এক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রকারীদের তিল পরিমাণ ছাড় দেয়া হবে না। জনগণের জান-মাল রক্ষায় তাৎক্ষণিকভাবে যা কিছু করা প্রয়োজন সেই নৈতিক সাহস সঞ্চয় ও চেতনা ধারণ করে মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ৯ থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত রাজপথেই থাকবে।
অপরদিকে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি সভাপতি ডা. শাহাদত হোসেন বলেন,১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলার রায় হতে পারে। এই রায়কে কেন্দ্র করে সরকারি দল অস্থিরতা তৈরীর চেষ্টা করছে। রায় যাই হোক আমরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচী বাস্তবায়ন করবো।আগামীকাল আমরা সমাবেশ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু পুলিশ প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। তাই আমরা আগামী ১৩ তারিখ লালদীঘিতে সমাবেশ করতে আবারো অনুমতি চেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ হলো সন্ত্রাসীদের দল। তাই তারা কাল রায়কে কেন্দ্র করে অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে মাঠে থাকার ঘোষনা দিয়েছে। তাদের মধ্যে জনভীতি কাজ করছে। তাই তারা নগরীতে কাল সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার প্রস্তুতি নিয়েছে। বিএনপি হলো ভদ্র মানুষের দল। আমরা অস্ত্র ও লাঠিকে বিশ্বাস করিনা।
এ বিষয়ে নগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, একুশে আগস্টের রায়কে কেন্দ্র করে আমরা ভীত নই। কারণ এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে বিএনপি জড়িত নয় বরং আওয়ামী লীগই জড়িত।
এই রায়কে কেন্দ্র করে তাদের কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে থাকতে পারে তাই তারা নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট অবস্থান নিতে চায়। বিএনপি জনগণের দল। এই রায় নিয়ে সরকার বিএনপির কোনো নেতৃবৃন্দকে সাজা দিলে বিএনপি জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিবাদ জানাবে বলে তিনি মত ব্যক্ত করেন।