প্রভাতী ডেস্ক: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।
১লা এপ্রিল সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে হাসপাতালের কেবিন ব্লকে নিয়ে আসা হয়। তার আগে একটি গাড়িতে করে তাঁর নিয়মিত ব্যবহারের জিনিসপত্র ছয় তলার ৬২১ ও ৬২২ নম্বর কেবিনে আনা হয়।
সেখানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জে এম জাহিদ হোসেন, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসসহ অন্যান্য নেতা উপস্থিত হয়েছেন। এ সময় দলের নেতাকর্মীদের একটি অংশ হাসপাতালের বাইরে থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে একটি কালো গ্লাসের কালো গাড়িতে করে নিয়ে আসা হয়। তাঁর সঙ্গে আছেন গৃহকর্মী ফাতেমা বেগমও। হাসপাতাল এলাকায় নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। হাসপাতালের সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।
হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের পাশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা অবস্থান নেন। পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা হাতে হাত রেখে নিরাপত্তা ব্যারিকেড তৈরি করেন কেবিন ব্লকের সামনে। সেখানে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান, কারা কর্তৃপক্ষসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। খালেদা জিয়াকে বহন করে নিয়ে যাওয়ার জন্য আগে থেকেই সেখানে একটি হুইলচেয়ার রাখা হয়। নারী পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় সেই হুইলচেয়ারে করেই খালেদা জিয়াকে কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে একই দিন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার শুনানির জন্য দিন ধার্য্য থাকলেও তিনি সেখানে হাজির হননি। এই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১০ এপ্রিল দিন রাখা হয়েছে।
শুনানি থেকে বেরিয়ে কারাগারের সামনে গণমাধ্যমের কাছে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ খান বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ, তাই তাঁকে আজ আদালতে হাজির করা হয়নি। এ মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ এপ্রিল।’
অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার কারণে পরবর্তীতে এই মামলার শুনানি হবে।
এর আগে গত ১০ মার্চ খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে আনার সব প্রস্তুতি থাকলেও তিনি আসেননি। এরপর ১৯ মার্চ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পুরোনো কারাগারের অভ্যন্তরে স্থাপিত বিশেষ আদালতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে সেদিন বিএনপির মহাসচিব গণমাধ্যমকে বলেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। আদালতে আসার আগে তিনি বমি করেছেন। মাথা সোজা রাখতে পারছেন না। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো।
উল্লেখ্য দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থান করছেন। এর পর থেকে তিনবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া এই হাসপাতালে এসেছেন। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি রয়েছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বেসরকারি বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে নিয়ে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের মাধ্যমের চিকিৎসা দেওয়ার।