
প্রভাতী ডেস্ক: চট্টগ্রাম ওয়াসা ঠিকাদারদের অর্থায়নে ওয়াসা কর্মকর্তাদের অনুষ্ঠিত বিলাসবহুল ‘ওয়াসা নাইট’ প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম অঞ্চলের নেতৃবৃন্দ।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম ওয়াসার কোটি টাকার ওয়াসা নাইট আয়োজনের বিষয়ে ক্যাব নেতৃবৃন্দ গণমাধ্যমে একটি যৌথ বিবৃতি প্রেরণ করেন।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, গ্রীষ্মের এই খরা মৌসুমে মহানগরজুড়ে পানির জন্য হাহাকার চললেও চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্মকর্তারা ব্যস্ত ওয়াসার ঠিকাদারদের অর্থায়নে আয়োজিত কোটি টাকার ওয়াসা নাইট আয়োজনে। নগরবাসীর অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্রদানকারী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের এ ধরনের আচরণকে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় বলে মত প্রকাশ করে রাষ্ট্রীয় সেবা সংস্থার গ্রাহক স্বার্থবিরোধী এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবি জানিয়েছেন । ক্যাব নেতারা বলেন, ‘ওয়াসার পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ছাড়া ঠিকাদারদের অর্থায়নে এ ধরনের আয়োজন শুধু অনৈতিকই নয়, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা বোর্ডের ক্ষমতাকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের শামিল। কারণ, যাবতীয় নীতি ও পরিকল্পনা ওয়াসা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার কথা। যদি অনুমোদনের প্রয়োজন না পড়ে, তাহলে বর্তমান বোর্ড অকার্যকর এবং তারা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় সক্ষম নয়। আর ওয়াসার তহবিলের কাছ থেকে যদি অর্থ ব্যয় না হয়ে থাকে, তাহলে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি ছাড়া কিছুই নয়। বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা উচিত।’
নেতারা আরো বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগরজুড়ে পানির জন্য হাহাকার চলছে, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচারিত হচ্ছে। কিন্তু ওয়াসা কর্তৃপক্ষ তা স্বীকার করছে না। পানি সংকটের কারণে ড্রিংকিং ওয়াটার ফ্যাক্টরির সংখ্যা বেড়েছে ব্যাপকহারে। তারপরও নগরবাসীর জন্য পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত হয়নি। সিটি করপোরেশনের একটি বড় অংশে এখনও পানির জন্য হাহাকার চলছে।’
নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যখনই পানির সংকট দেখা দেয়, ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বারবার বিভিন্ন প্রকল্পের দোহাই দিয়ে থাকে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পর তাদের সেই প্রতিশ্রুতির কোনো ফল নগরবাসী পায় না। এর মূল কারণ পানির অপচয় রোধ, সরবরাহ লাইনে ত্রুটি- লিকেজ, পানি চুরি বন্ধ, বিলিং ব্যবস্থার ত্রুটি দূর না করে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বারবার নতুন নতুন প্রকল্পের ওপর জোর দিয়ে আসছে। ফলে ওয়াসা তলাবিহীন জুড়ির মতো। এতে যাই ঢালা হচ্ছে, সবই খালে গিয়ে পড়ছে।
নেতারা বলেন, ক্যাব পানির অপচয় রোধ, সেবা সার্ভিসের অব্যবস্থাপনা রোধে গ্রাহকের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি, গ্রাহক সেবার মান ও অনিয়ম রোধে ত্রিপক্ষীয় গণশুনানির আয়োজন করা, গ্রাহক হয়রানি রোধে তাৎক্ষণিক প্রতিকারের জন্য ডিজিটাল হেলপ লাইন চালু ও হেলপ ডেস্ক আধুনিকায়ন, দাম বাড়ানোসহ সেবার মানোন্নয়নে নীতিমালা প্রণয়নে ভোক্তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি জানালেও মন্ত্রণালয় ও ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এ পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। যা বর্তমান আধুনিক বিশ্বে সুশাসন ও ন্যায্য ব্যবসার পরিপন্থি এবং একটি আদর্শ সেবা সংস্থার মডেলেরও পরিপন্থি।