শনিবার, ১২ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শনিবার, ১২ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শনিবার, ১২ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৬ই মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের নিষ্ঠুরতার কারণে অকালে ঝরে গেল অরিত্রির মত একটি ফুটন্ত গোলাপ

প্রভাতী ডেস্ক: নকলের অভিযোগে স্কুল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী অরিত্রি অধিকারী (১৫) প্রিন্সিপাল নাজনীন ফেরদৌসের কাছে ক্ষমা চেয়েছিল।

শুধু তাই নয়, তার পা ধরে কান্নাকাটি করেছিল অরিত্রি; যাতে তাকে টিসি না দেয়া হয়। কিন্তু কোনো কিছুতেই মন গলেনি অধ্যক্ষের।

অরিত্রির মা জানান,অরিত্রি দ্রুত বাসায় চলে আসে এবং তাকে জানিয়েছিল যে সে আর বাঁচতে চায় না। তিনি বলেন অধ্যক্ষ যদি অরিত্রিকে ক্ষমা করে দিতেন, তা হলে সে আত্মহত্যা করত না।

অরিত্রির বাবা-মা জানিয়েছেন-নকলের অভিযোগ পেয়ে সোমবার অরিত্রির সঙ্গে তারা স্কুলে যান। পরে তাদের ভাইস প্রিন্সিপালের গেলে তারা মেয়ের নকল করার ব্যাপারে ভাইস প্রিন্সিপালের কাছে ক্ষমা চান।

কিন্তু ভাইস প্রিন্সিপাল কিছু করার নেই বলে তাদের প্রিন্সিপালের রুমে যেতে বলেন। সেখানে গিয়েও তারা ক্ষমা চান।

কিন্তু প্রিন্সিপালও তাতে সদয় হননি। পরে তার মেয়ে প্রিন্সিপালের পা ধরে ক্ষমা চেয়ে কান্নাকাটি করলেও তাদের বেরিয়ে যেতে বলেন এবং পরের দিন টিসি নিয়ে আসতে বলেন।

তারা আরও জানান, তাদের ডেকে নিয়ে মেয়ের সামনেই অপমান করে বলেন, সিদ্ধান্ত হয়েছে অরিত্রিকে নকলের অভিযোগে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া হবে। এ অপমান সইতে না পেরে বাসায় এসে অরিত্রি আত্মহত্যা করে।

সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর শান্তিনগরে সাত তলা ভবনের সপ্তম তলায় নিজ ফ্ল্যাটের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় অরিত্রিকে পাওয়া যায়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে চিকিৎসকরা অরিত্রিকে মৃত ঘোষণা করেন।

সে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। তার বোনও ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ছাত্রী।

অরিত্রির গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদরে। তার বাবা দিলীপ কুমার একজন সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী।

এ বিষয়ে গতকাল সোমবার ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল নাজনীন ফেরদৌস বলেন, ওই ছাত্রী পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোনে নকল দেখে পরীক্ষা দিচ্ছিল। বিষয়টি পরিদর্শক শিক্ষক বুঝতে পেরে খাতা নিয়ে নেন। মোবাইল ফোনে পুরো বই কপি করা ছিল।

তিনি আরও বলেন, সোমবার ছাত্রীর মা-বাবা স্কুলে এসেছিল। মেয়েকে পরীক্ষা দিতে সুযোগ প্রদানের জন্য। আমাদের স্কুলে কেউ নকল করলে তাকে আর ওই বর্ষে পরীক্ষা দেয়ার নিয়ম নেই। আমরা তাকে পরবর্তী বর্ষের সঙ্গে পরীক্ষা দেয়ার পরামর্শ দিই। পরে জানতে পারি অরিত্রি আত্মহত্যা করেছে।

তবে একদিন পর আজ মঙ্গলবার অরিত্রি অধিকারী আত্মহত্যার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে অরিত্রির পরিবার এবং দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print