প্রভাতী ডেস্ক: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী দেয়ার ক্ষেত্রে অনেকটা কৌশলী অবস্থান নিয়েছে বিএনপি। দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কয়েকজন একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। এর বাইরে আপাতত প্রতি আসনেই মনোনয়নপত্র জমা দেবেন একাধিক প্রার্থী। জোটের শরিকদের ছাড় দেয়া আসনেও বিএনপি প্রার্থী রাখবে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনের একদিন আগে ৮ ডিসেম্বর ধানের শীষের একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে। কোনো কারণে একজনের প্রার্থিতা বাতিল হলে যাতে অন্যজনের নির্বাচনে সুযোগ থাকে- এজন্য এমন সিদ্ধান্ত দলটির। আওয়ামী লীগের জোটগত প্রার্থী দেখে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করাও এর আরেকটি কারণ। প্রতি আসনে একাধিক মনোনয়ন ফরম দেয়ার কারণে প্রার্থীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য নিজেদের মধ্যে বিরোধে জড়ালে কঠোর ব্যবস্থাসহ চার নির্দেশনা দিয়েছে হাইকমান্ড।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আজ ২৮ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর। কোন প্রার্থীকে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ওইদিন পর্যন্ত সে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় বিএনপির হাতে থাকছে। বিধি অনুযায়ী বিএনপি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চিঠি দিয়ে যাকে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার কথা বলবে সেই হবে বিএনপি বা জোটের প্রার্থী। বাকিরা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই নির্বাচন করা থেকে বাদ পড়বেন।
জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর প্রতীক বরাদ্দের চিঠি দেয়ার আগ পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে দলীয় প্রার্থীর নাম জানানো হবে না। চিঠি পাঠিয়ে তারপর তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রার্থীদের নাম প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত সময় আছে, এ কারণে প্রার্থীদের চিঠি দেয়ার বিষয়ে তেমন কোনো সমস্যা হবে না।
বিএনপির এক নীতিনির্ধারক বলেন, সারা দেশে বিএনপির অনেক নেতার নামে মামলা আছে। অনেকে মিথ্যা মামলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ কারণে বিভিন্ন আসনে একাধিক প্রার্থীর নাম রাখা হয়েছে। একজন বাদ পড়লে যেন ওই আসনে দ্বিতীয়জন কিংবা তৃতীয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এবার বিএনপি কোনোভাবে ভোটের মাঠ ছাড়বে না, যে কারণে মনোনয়নের চিঠি নিয়েও একটু বেশি সময় নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের সর্বোচ্চ ৬০টি আসন ছাড়তে চায় বিএনপি। তবে দুই জোটের শরিকদের চাহিদা আরও বেশি। ২০ দলীয় জোটের শরিকদের জন্য ৪২টি আসন ছাড় দিচ্ছে বিএনপি। তবে ১৮টি আসন ছাড়তে চাইলে এখনও রাজি হয়নি ঐক্যফ্রন্টের শরিকরা। তাই আপাতত ৬০টিরও বেশি আসনে দুই জোটের শরিকরা মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে এখনও ১১ দিন সময় বাকি আছে। দুই জোটের শরিকদের মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে এই সময় অনেক।
এক স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে অবশ্যই প্রত্যেকের ত্যাগ, তিতিক্ষা ও যোগ্যতার সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করা হবে।