
পাঁচটি ব্যাংক একীভূত হয়ে দেশে প্রথম রাষ্ট্রায়ত্ত ইসলামী ব্যাংক হতে যাচ্ছে। নাম হবে ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক পিএলসি বা ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। দুর্বল এ ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতেই এ উদ্যোগ সরকারের। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানায় এসব ব্যাংকের প্রতি আস্থা ফেরার পাশাপাশি তারল্য সংকটও কাটবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে ব্যাংকে থাকতে হবে পর্যাপ্ত তারল্য।
অনিয়ম, দুর্নীতি ও তারল্য সংকটে নুইয়ে পড়া পাঁচ ইসলামী ব্যাংক একীভূত হয়ে একটি ব্যাংকে রূপান্তরিত হচ্ছে। যা দেশে প্রথমবারের মতো হতে যাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ইসলামী ব্যাংক। পরিচালিত হবে সরকারি মালিকানায়। এতে গ্রাহকের আস্থা ফিরবে—এমনটাই প্রত্যাশা বাংলাদেশ ব্যাংকের।
যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত জুন শেষে ৬ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের খেলাপি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। যা বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেক। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের গ্যারান্টার খোদ সরকার। ফলে আর্থিক অবস্থা খারাপ হলেও আস্থা যাবে না গ্রাহকদের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘এই ৫টি দুর্বল ব্যাংক একীভূত হয়ে, যখন রাষ্ট্রের মালিকানায় আসবে, সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি বিশ্বাস সৃষ্টি হবে যে এই দুর্বল একীভূত ব্যাংকের মালিকানা এখন রাষ্ট্রের হাতে। রাষ্ট্রের কাছে আমার আমানত সুরক্ষিত থাকবে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত হওয়ার মাধ্যমে গ্রাহকের আস্থা কতখানি ফিরবে তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। তবে গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে হলে নতুন ইসলামী ব্যাংকে তারল্য সংকটে জোর দিতে হবে। একইসাথে খেলাপি ঋণ আদায়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও জানান তারা।
বিআইবিএমের সাবেক মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘মার্জ (একীভূত) আর অ্যাকুইজিশন (অধিগ্রহণ) তো হয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে। কিন্তু এখানে অ্যাকুইজিশন করছে সরকার। আমি এই জিনিসটার বিপক্ষে। কারণ আমাদের দেশে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর এক্সপেরিয়েন্স কিন্তু ভালো না। সরকার যদি অ্যাকুইজিশন করতেই চায়, তাহলে সরকারের ব্যাংকগুলোকে সরকার ঠিক করে না কেন? সেগুলোতেও তো ক্যাপিটাল শর্টফল আছে।’
নতুন রাষ্ট্রায়ত্ত ইসলামী ব্যাংক শক্তিশালী হলে তাদের আবারও বেসরকারি খাতে তুলে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।