
চট্টগ্রামে জনতা ব্যাংকের আওয়ামীপন্থী সিবিএ নেতা এখন জাতীয়তাবাদী কর্মচারী ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মোটা অংকের লেনদেনের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী কর্মচারী নেতৃবৃন্দেকে বঞ্চিত করে স্বৈরাচারের এই দোসরকে দলে ভেড়ানোর অভিযোগ ত্যাগী পদ বঞ্চিত নেতৃবৃন্দের।
অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রামে জনতা ব্যাংক কর্পোরেট শাখায় কর্মরত কুতুব উদ্দিন বিগত ১৬ বছর বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিকলীগের আওতাভুক্ত সংগঠন জনতা ব্যাংক গণতান্ত্রিক কর্মচারী ইউনিয়নের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সদস্য ও কর্পোরেট শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্র-জনতার বিপ্লবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর খোলস পাল্টে আপাদমস্তক জাতীয়তাবাদী আদর্শের কর্মী বনে যান স্বৈরাচারের এই দোসর। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি ভাগিয়ে নেন জাতীয়তাবাদী কর্মচারী ইউনিয়ন কর্পোরেট শাখার সাধারণ সম্পাদকের পদ। এই পদ নিয়েও তিনি সন্তুষ্ট নয়, তাই নিজেকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ভুয়া পরিচয় দেন। এই পরিচয়ে তিনি কক্সবাজার জেলা কমিটি থেকে একটি সম্মাননাও গ্রহণ করেছেন।
পদ বঞ্চিত জাতীয়তাবাদী ত্যাগী নেতাকর্মীরা জানান কুতুব উদ্দীন আওয়ামী সরকারের আমলে অনেককে জোরপূর্বক গণতান্ত্রিক কর্মচারী ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত করতেন, কেউ রাজি না হলে তার উপর চলতো বিভিন্ন নির্যাতন। সর্বশেষ কপালে জুটতো প্রত্যান্ত অঞ্চলে বদলীর মতো শাস্তি। তারা আরো জানায়, কুতুবউদ্দিন গণতান্ত্রিক কর্মচারী ইউনিয়ন থেকে জাতীয়তাবাদী কর্মচারী ইউনিয়নে এসে একই পদ
নেওয়ার পেছনে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তিনি হলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি জামাল উদ্দীন। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তিনি কুতুবকে এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে জায়গা করে নেন।
আরো জানা যায়, কুতুবউদ্দিনের নেতৃত্বে জুলাই বিপ্লবে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হলেও জামাল উদ্দীনের তদবীরে তিনি এখনো বহাল তবিয়তে। তার বিরুদ্ধে কোন থানায় একটা মামলা পর্যন্ত হয়নি।
জানতে চাইলে কুতুবউদ্দিন বলেন, তিনি জাতীয়তাবাদী সংগঠনে স্বেচ্ছায় যেতে চাননি। তিনি এখনো হৃদয়ে আওয়ামী রাজনীতিকে ধারণ করেন। জামাল উদ্দীন তার সাথে রাজনীতি করতে উৎসাহিত করেছেন। নিজেকে সৎ লোক দাবী করে বলেন, তিনি সৎ বলে তাকে সভাপতি জামাল জাতীয়তাবাদী সংগঠনে রাজনীতির সুযোগ দিয়েছেন। একপর্যায়ে তিনি বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। কিন্তু চাপে পড়ে এবং দূরদূরান্তে বদলী ঠেকাতে বাধ্য হয়ে আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী কর্মচারী ইউনিয়নের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি জামাল উদ্দীন বলেন, কুতুব সৎ লোক এবং যোগ্যতাসম্পন্ন বলে জাতীয়তাবাদী সিবিএ সংগঠনে রাজনীতির সুযোগ দিয়েছেন, বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দও অবগত আছেন। এই ব্যাপারে প্রতিবেদন করলে মামলার হুমকিও দেন সিবিএ’র এই নেতা।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংক এমপ্লয়ীজ ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, কুতুবউদ্দিন আওয়ামী সম্পৃক্ত সেটা তিনি অবগত নয়। এখন অবগত হওয়ার পর কি সিদ্ধান্ত নিবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরবর্তী মিটিংয়ে সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই ধরনের বিষয়ে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই।
★আগামী সংখ্যায় প্রকাশিত হবে কুতুবউদ্দিনের দূর্নীতির টাকায় অর্জিত আয় বহির্ভূত সম্পদ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন।