পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেছেন, যখনই আপনি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে (সিএএ) নাম লেখালেন, তখনই বাংলাদেশি হয়ে গেলেন। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) কোচবিহারের মাথা ভাঙায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী জগদীশ বাসুনিয়ার সমর্থনে আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় এমন মন্তব্য করেন তিনি।
অসময়ের কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে রোববার (৩১ মার্চ) রাতেই এই জেলায় আসেন মমতা। তার পর থেকেই এখানে লোকসভা নির্বাচনে প্রচার চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার কোচবিহারের জনসভা থেকে তিনি বলেন, আমি থাকাকালীন ওদের (বিজেপি সরকার) কোনো ক্ষমতা নেই, বাংলার মানুষের গায়ে হাত দেওয়া। ভোটের আগে ক্যা ক্যা করে চিলাচ্ছে। ক্যা (সিএএ) হচ্ছে মাছের মাথা, আর মাছের ল্যাজাটা হচ্ছে এনআরসি। মিথ্যা কথা বলার, আর মানুষকে বঞ্চিত করার একটা লিমিট থাকা উচিত।
‘আপনার মা-বাবা বাংলাদেশে ছিলেন, তাদের জন্ম সনদ আনতে হবে। আর আপনি যখনই সিএএতে নাম লেখালেন, সঙ্গে সঙ্গে আপনি বাংলাদেশি হয়ে গেলেন। অর্থাৎ আপনি লক্ষীর ভাণ্ডার পাবেন না, কন্যাশ্রী পাবেন না, আপনি ভোট দিতে পারবেন না, আপনার নাগরিকত্ব থাকবে না, আপনার সরকারি অধিকার থাকবে না। সুতরাং, এই আইন ভালো না খারাপ আপনারাই বুঝে নিন। আসামে এখনো ডিটেনশন ক্যাম্প রয়েছে। আপনাদের বিদেশি বলে চিহ্নিত করে রাখা হবে।’
তৃনমূল প্রধান আরও বলেন, কোনো এনআরসি হবে না, কোনো সিএএ হবে না। হিন্দু, মুসলিম, শিখ, রাজবংশী থেকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের সব মানুষ নিশ্চিন্তে থাকুন। আমি বাংলায় সিএএ হতে দেবো না।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মমতা বলেন, যেদিন থেকে কেন্দ্রের ক্ষমতায় এসেছেন, সেদিন থেকেই বাংলার উপর অত্যাচার শুরু করেছেন। বাংলাকে মানে না, বাংলাকে টাকা দেয় না। ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল এই পাঁচ বছরে ৬ লাখ ৫০ হাজার কোটি রুপি বাংলা থেকে তুলে নিয়ে গেছে। অথচ আমাদের এক লাখ ৮০ হাজার কোটি রুপি আটকে রেখেছে।
ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপির কোচবিহারের প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিককে ইঙ্গিত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপনাদের একজন বাবুর বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা রয়েছে। আমরা দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি। আমাদের দলে ও ছিল আপদ, বিজেপির কাছে আজ সম্পদ হয়েছে।
‘আমি একটু বলবো, তোমার নামে কত মামলা রয়েছে? সব নথি রয়েছে আমার কাছে। স্থানীয় নেতাদের দিয়ে দেব। আজ নাকি সে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী? লজ্জা, লজ্জা, দেশের লজ্জা। দেশের কলঙ্ক, গণতন্ত্র কলঙ্কিত হয়েছে।’
মমতা বলেন, আপনাদের এখানে রাজবংশী লোক আর ছিল না? আমাদের প্রার্থী জগদীশ বাসুনিয়াকে দেখুন। মাটির মানুষ। কম কথা বলেন, কাজ বেশি করেন।