প্রভাতী ডেস্ক: দল পরিবর্তন করেও শেষ রক্ষা হলো না সাবেক মন্ত্রী নাজমূল হুদার। ঘুষ গ্রহণ ও দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকে চার বছর কারাদন্ড দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। রায়ের কপিটি বিচারিক আদালতের হাতে পৌছার ৪৫ দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অন্যথায় বিচারিক আদালত তার গ্রেপ্তার নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি করা হলে তা জাতীয় স্বার্থ, অর্থনীতি ও দেশের
ভাবমূর্তির জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। হুদা দম্পতির আপিলের ওপর পুনঃ শুনানি শেষে গত বছরের ৮ নভেম্বর বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের বেঞ্চ ওই রায় দেন। প্রায় এক বছর পরে রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি লেখা শেষে সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে গতকাল ৬৭ পৃষ্ঠার রায়টি প্রকাশ করা হয়।
ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে নাজমুল হুদার ৭ বছর এবং তার স্ত্রী সিগমা হুদার ৩ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করলে রায়ে নাজমুল হুদার সাজা কমিয়ে ৪ বছর করা হয়। এ ছাড়া তার স্ত্রী সিগমা হুদা যে পরিমাণ সাজা খেটেছেন, তা-ই শাস্তি হিসেবে গণ্য করার রায় দেন হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ২১ মার্চ দুদকের উপ পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম ধানমন্ডি থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, সিগমা হুদার মালিকানাধীন সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘খবরের অন্তরালে’র অ্যাকাউন্টে রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের কন্ট্রাক্টার মীর জাহের হোসেনের কাছ থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন নাজমুল হুদা।
একই বছরের ২৭ আগস্ট বিচার শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত নাজমুল হুদাকে ৭ বছরের কারাদন্ড ও আড়াই কোটি টাকা জরিমানা এবং তার স্ত্রী সিগমা হুদাকে ৩ বছরের কারাদন্ডের রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ ২০১১ সালের ২০ মার্চ এই দম্পতিকে ওই সাজার রায় থেকে খালাস দেন। পরে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর ওই খালাসের রায় বাতিল করে হাইকোর্টে পুনঃশুনানিতে পাঠায়। গত বছরের ৮ নভেম্বর পুনঃশুনানি শেষে হুদা দম্পতির আপিল খারিজ করে রায় দেন আদালত।